শনিবার, নভেম্বর ২৩

ছেলেকে ব্ল্যাকমেল করে স্বামীকে হত্যা, ১ বছর পর খুললো জট

0

ঢাকা অফিস: ছেলেকে সাথে নিয়ে স্বামীকে হত্যা করা হয়। পরে মৃত দেহ পুতে রাখা হয় রেল লাইনের পাশে। এরপর সাজানো হয় নিখোঁজের গল্প। ঘটনাটি ১১ মাস আগের বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার রানিরপাড়া গ্রামের। রফিকুল ইসলাম পেশায় কৃষক। স্ত্রী রেহেনা বেগম তিন সন্তানের জননী। রেহেনার গোপন প্রেম প্রতিবেশী মহিদুলের সাথে।পরকিয়ার পথের কাঁটা সড়িয়ে ফেলতেই পরিকল্পনা মোতাবেক ছেলে জসীমকে বাবার সম্পর্কে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে হাত করে মা রেহেনা এবং প্রেমিক মহিদুল। পরিকল্পনা মোতাবেক ২০১৯ সালের জুনের মাঝামাঝি সময়ে ঘুমের বড়ি খাইয়ে প্রেমিক মুহিদুল, নিহতের স্ত্রী রেহানা, ছেলে জসিম এবং রেহানার বোনের ছেলে শাকিল মিলে রফিকুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।পরে লাশ বস্তায় ভরে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বগুড়া সোনাতলা রেললাইনের পাশে প্রায় তিনফুট গর্ত করে পুঁতে রাখে।এরপর ২০১৯ সালের  পহেলা জুলাই সোনাতলা থানায় রফিকুল হারানো জিডি করা হয় (জিডি নং ২৫)। জিডিটি করেছিলেন নিখোঁজ ব্যক্তির ভাই শফিকুল ইসলাম। এই জিডির সূত্র ধরেই অনুসন্ধান শুরু করে সোনাতলা সার্কেলের এএসপি কুদরত ই খুদা শুভ এবং সোনাতলা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জাহিদ। ঘটনার প্রায় একবছর পর বৃহস্পতিবার রাতে মহিদুলকে আটক করে পুলিশ। এরপর তেকানি চুকাইনগরের শাকিলকে (২২)। তার কাছ থেকে কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেলে আটক করা হয় নিখোঁজ ব্যক্তির স্ত্রী রেহানা এবং ছেলে জসিমকে। নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে রেহানা এক পর্যায়ে স্বীকার করে যে পরকীয়া প্রেমের পথের বাধা সরাতেই রফিকুলকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে রেহানা এবং মুহিদুল। ঘটনাচক্রে শাকিল জড়িয়ে যায়। ছেলেকে বাবার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মানসিক ব্ল্যাকমেইল করে পক্ষে নিয়ে এসে পিতৃহত্যার মতো ঘৃণ্য কাজে জড়িত করে মা রেহানা। ঘটনার দিন মুহিদুল এবং জসিম ঘুমের বড়ি এনে রাতের খাবারের সাথে মিশিয়ে রফিকুলকে খাইয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করিয়ে গলা টিপে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে চারজনই সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। এরপর শাকিল, মুহিদুল এবং জসিম লাশ ঘাড়ে করে রেললাইনের পাশে নিয়ে পুঁতে রাখে।
সোনাতলা সার্কেলের এএসপি কুদরত ই খুদা শুভ জানান, গোপন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল নিহতের স্ত্রী রেহেনাকে। পরে মহিদুলের সাথে রেহেনার পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক জানা যায়। এক পর্যায়ে তাকে আটক করে ক্লু পাওয়া যায়। শুক্রবার (২৯ মে) পুলিশ সুপার মো. আলী আশরাফ ভূঞার উপস্থিতিতে সোনাতলায় পানির মধ্য থেকে গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় আশেপাশের কয়েক গ্রামের কয়েক হাজার লোক জমায়েত হয়েছিল।

Share.