ডেস্ক রিপোর্ট: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফাঁকা এক ভবনকে হাসপাতালে রূপান্তর করলো চীন। করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে হুবেই প্রদেশের উহান শহরের কাছেই তৈরি করা হয়েছে ১০০০ শয্যার এই বিশেষায়িত হাসপাতাল। মঙ্গলবার তা উদ্বোধন করা হয়। উল্লেখ্য, চীনে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের বেশিরভাগই করোনার উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। চীনের হুবেই ছাড়াও রাজধানী বেইজিংসহ ২৯টি প্রদেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, নেপাল, ফ্রান্স, সৌদি আরব, কানাডাসহ অন্তত ১৬টি দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে। এমন পরিস্থিতিতে উহানের নিকটবর্তী হুয়াংজু শহরে এক ফাঁকা বহুতল ভবনকে বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে তৈরি করা হয়। সেখানে শুধু করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। ফাঁকা ওই ভবনটি হুয়াঙগ্যাঙ সেন্ট্রাল হাসপাতাল করার জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। আগামী মে মাসে এটি উদ্বোধনের কথা ছিল। তবে গত শুক্রবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ওই ভবনটিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করার নির্দেশ দেয়। এরপরই এটি চিকিৎসার জন্য পুরোপুরি তৈরি হয়ে যায়। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য ডেইলি মেইল জানিয়েছে, নির্মাণ ও ইউটিলিটি সংস্থাগুলো এবং আধাসামরিক পুলিশ কর্মকর্তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে হাসপাতালটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এজন্য দিনরাত কাজ করেন ৫০০-এরও বেশি কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক। হুয়াঙগ্যাঙ সরকার জানিয়েছে, সোমবারের মধ্যে কর্মীরা পানি, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করে। সময় মতো কাজ শেষ করতে ৫০০ কর্মীর পাশাপাশি ভারী যন্ত্রপাতিও ব্যবহার করা হয়। উহানের ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই শহরটিতেও করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন বাসিন্দারা। এরইমধ্যে অন্য হাসপাতাল থেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মাউন্টেইন রিজিওনাল মেডিকেল সেন্টার নামের বিশেষায়িত হাসপাতালটিতে আনা শুরু হয়েছে। এর আগে ৬ দিনের মধ্যে একটি হাসপাতাল বানিয়ে বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিল বেইজিং। চীনের পররাষ্ট্র সম্পর্ক পরিষদের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য প্রকল্পের সিনিয়র ফেলো ইয়াংজুং হুয়াং বলেন, এমন দ্রুত কাজ শেষ করার রেকর্ড তাদের রয়েছে। এর আগে ২০০৩ সালে সাত দিনের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করেছিলো চীন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হুয়াং বলেন, দেশে আমলাতান্ত্রিক বিলম্ব কম হয় এবং আর্থিক সচ্ছলতা থাকায় দ্রুতগতিতে কাজ করা সম্ভব হয়। এছাড়া চীনের প্রকৌশল দক্ষতার প্রশংসা করেছেন তিনি। বলেছেন, আকাশচুম্বী ভবনগুলোও রেকর্ড গতিতে তৈরির ইতিহাস রয়েছে চীনের। অনেকে হয়তো ভাবতেও পারবেন না। কিন্তু চীন তা করে দেখাতে পারে।
দুই দিনেই প্রস্তুত ১০০০ শয্যার হাসপাতাল
0
Share.