শনিবার, ডিসেম্বর ৭

রাত পেরোলেই ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা- ২০২০’

0

ঢাকা অফিস: দীর্ঘ এক বছরের অপেক্ষা শেষে লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের নিয়ে আবারও শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা- ২০২০’। রাত পেরোলেই সাহিত্যপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে রাজধানীর বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণ। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা যায় এরই মাঝে বইমেলার সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। বর্ণিল সাজে সেজেছে মেলা চত্বর। মেলা ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে শুরু করে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত বিরাজ করছে উৎসবের আবহ। রবিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় বইমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের মেলা উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মেলা পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরপরই সর্বসাধারণের জন্য খুলে যাবে মেলার প্রবেশপথ। এবারে বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও একাডেমি সংলগ্ন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ৮ লাখ বর্গফুট জায়গা জুড়ে। সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থাগুলো থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে। এখানে মোট ৪৩৪ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ৬৯৮টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বাংলা একাডেমি অংশে ১২৬টি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৭৯টি ইউনিট। পাশাপাশি বাংলা একাডেমিসহ ৩৩টি প্রকাশনা সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে ৩৪টি প্যাভিলিয়ন। সব মিলিয়ে এবারের মেলায় মোট ৫৬০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৭৩টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবারের আয়োজন প্রসঙ্গে মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক জালাল আহমেদ বলেন, বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশকে এবারে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো শিকড়, সংগ্রাম, মুক্তি ও অর্জন। এর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন অংশকে চিত্রিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। ‘এবারে মেলার পরিসর অনেক বেড়েছে। একজনের পক্ষে একদিনে পুরো মেলা ঘুরে দেখা সম্ভব নাও হতে পারে। দর্শনার্থীরা ক্লান্ত হলে যেন বসে বিশ্রাম নিতে পারে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। স্বাধীনতা স্তম্ভের পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে জলাধারের দুই পাশসহ মেলার বিভিন্ন স্থানে বসে বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সব কাজই প্রায় শেষ। নিরাপত্তার দিকটিও বিশেষভাবে দেখা হচ্ছে।’ মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, এরই মাঝে অধিকাংশ স্টলে বই চলে এসেছে। হাতেগোনা কিছু স্টল আর বিশ্রামকেন্দ্রে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। এবারের মেলা অন্যবারের তুলনায় অনেক পরিপাটি ও গোছানো। মেলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, এবার প্রায় আট লাখ বর্গফুট জায়গা নিয়ে আমাদের স্বপ্নের মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চেষ্টা করছি আমাদের এই প্রাণের মেলা যেন সত্যিকার অর্থেই প্রাণ পায়। কোনো প্রকার অসুবিধা ছাড়াই সবাই যেন দীর্ঘ এক মাস মেলা উদযাপন করতে পারে। রাত পেরোলেই ভাষা শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত বইমেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ভেসে বেড়াবে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ। জমে উঠবে সাহিত্যপ্রেমীদের আলোচনা-আড্ডা। লিপ ইয়ার হওয়ায় এবারের মেলা চলবে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে বইমেলা। অন্যদিকে ছুটির দিন মেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এছাড়া ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ খোলা থাকবে।

Share.