ঢাকা অফিস: স্বাধীনতার ৫১ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। শুক্রবার সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। ড. মোশাররফ বলেন, ‘আজকের এই দিনে মহান বীর শহীদদেরকে স্মরণ করছি, যারা জীবন দিয়ে আমাদেরকে স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো-স্বাধীনতার ৫১ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পূরণ হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের যে স্বপ্ন ছিল, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে, সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পূর্ণরূপে ভূলুণ্ঠিত।’ খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের স্বপ্ন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে, দেশে অর্থনৈতিক সামাজিক সাম্য ও মানবিক মর্যাদা মানবিক অধিকার এবং এ দেশের মানুষের মধ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হবে। সেই স্বপ্নে এই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে একান্ন বছরে বাংলাদেশের সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পূর্ণরূপে ভূলুণ্ঠিত।’ তিনি বলেন, ‘আজকে সমাজে অশান্তি বিরাজ করছে। এই সরকার দিনের ভোট রাতেই ডাকাতি করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে। আজকে তারা ফের দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্য সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দি করছে।’ বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘ ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ৭ ডিসেম্বরের আগে ও পরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার যে তাদের পুরনো দমননীতি ফের চালাচ্ছে, এই ঘটনায় শুধু দেশের মানুষ নন বিদেশি বন্ধুরাও ক্ষুব্ধ।’ ‘দেশে গণতন্ত্র নয়, চলছে অর্থনৈতিক লুটপাট, চাঁদাবাজি, দেশে থেকে বিদেশে অর্থপাচার। তার জন্য অর্থনীতি ধ্বংস প্রায়’ যোগ করেন খন্দকার মোশাররফ। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা যে ১০ দফা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দিয়েছি, ১০ দফার পক্ষে এদেশের সকল জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান করছি। যুগপৎ আন্দোলনের কথা আমরা ঘোষণা করেছি। যুগপৎ আন্দোলনে কে আসবে, কে না আসবে- এ ব্যাপারে আমাদের কোনো বক্তব্য থাকতে পারে না। যারা এই সরকারের বিদায় চায়, দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়, এই ইস্যুতে আন্দোলন করলে আমরাতো নিষেধ করতে পারি না।’ এর আগে বিএনপি ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বীর সন্তানদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহাজাহান ওমর, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি নেতৃবৃন্দ সাভারে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও ফাতিহা পাঠ করেন। এদিকে শুক্রবার বেলা আড়াইটায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি বের করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো-স্বাধীনতার ৫১ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পূরণ হয়নি: খন্দকার মোশাররফ
0
Share.