অলিম্পিক মেডেলজয়ী একমাত্র ইরানি নারী দেশ ছাড়লেন

0

ডেস্ক রিপোর্ট: ইরানের ‘রাষ্ট্রীয় ভণ্ডামি, মিথ্যাচার আর অবিচারের’ প্রতিবাদ জানিয়ে দেশ ছেড়েছেন দেশটির অলিম্পিক মেডালজয়ী একমাত্র নারী অ্যাথলিট কিমিয়া আলিজাদেহ। ইরানে অ্যাথলিটদের ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ ব্যবহার করা হয় বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি৷ ইরানের ছোড়া মিসাইলে ইউক্রেইনের বিমান ভূপাতিত হয়ে ১৭৬ জন নিহতের ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে আলিজাদেহ ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘‘আমি কী স্বাগত জানাব, বিদায় বলব, নাকি শোক প্রকাশ করব?” ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে তায়কোয়ান্দোতে আলিজাদেহ ব্রোঞ্জ পদক জেতেন৷ সেসময় প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি তো বটেই, দেশটির অপেক্ষাকৃত রক্ষণশীল অংশেরও প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু সম্প্রতি এই ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নানা নিপীড়ন নিয়ে আলিজাদেহ সোচ্চার হয়েছেন৷ তার ভাষায়, ইরানের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ‘ভণ্ড’, ‘মিথ্যাবাদী’, ‘বিচারহীন’ এবং ‘তোষণমূলক’৷ আলিজাদেহ বলেন, ‘‘আমি কেবল তায়কোয়ান্দো, নিরাপত্তা ও সুখী জীবন চেয়েছিলাম৷ ইরানের লাখ লাখ নারীর একজন আমি, যাদের নিয়ে তারা বছরের পর বছর ধরে খেলা করছে৷” পর্দাপ্রথার দিকে ইঙ্গিত করে ২১ বছর বয়সী এ তরুণী বলেন, ‘‘তারা যা পরতে বলেছে, আমি তাই পরেছি৷ তারা যা করতে বলেছে, তাই করেছি৷ কিন্তু আমাদের চাওয়ার কোনো দাম ছিল না তাদের কাছে৷” আলিজাদেহ লিখেছেন, ইউরোপে তাকে কেউ আমন্ত্রণ জানায়নি৷ কোন দেশে তিনি আছেন, সে বিষয়েও কিছু বলেননি৷ তবে তিনি নেদারল্যান্ডসে আশ্রয় নিয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার আলিজাদেহর নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ প্রথম প্রকাশ হয়৷ ইরানের বার্তা সংস্থা আইএসএনএ-এর খবরের শিরোনাম ছিল- ‘‘ইরানের তায়কোয়ান্দোর জন্য ধাক্কা৷ কিমিয়া আলিজাদেহ নেদারল্যান্ডসে পাড়ি জমিয়েছেন৷” এরপর এ নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা৷ ইরানের পার্লামেন্ট সদস্য আবদুলকরিম হোসেইনজাদেহ দেশের ‘সম্পদ’-এর এভাবে ‘পালিয়ে যাওয়া’ আটকাতে ব্যর্থ হওয়ায় ‘অযোগ্য কর্মকর্তাদের’ দায়ী করেন৷ আলিজাদেহ তার পরবর্তী কর্মপরিকল্পনার কথা না জানালোও ‘প্রিয় ইরানি জনগণকে’ উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তিনি যেখানেই থাকুন ‘ইরানের সন্তান’ হিসেবেই থাকবেন৷ আলিজাদেহর মাধ্যমে টোকিও অলিম্পিকে পদক পাওয়ার আশা করছিল ইরান৷ বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ইরানের গণমাধ্যম বলছে, আলিজাদেহ টোকিও অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঠিকই, তবে ইরানের পতাকা নিয়ে নয় ৷

Share.