বিনোদন ডেস্ক: আজ (২ ফাল্গুন) বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী।১৯১৬ সালের এই দিনে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামে এক কৃষক পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর পিতার নাম ইব্রাহীম আলী ও মাতার নাম নাইওরজান। শাহ আবদুল করিমের ছেলেবেলা কেটেছে চরম দারিদ্র্য আর দুঃখ-কষ্টের মধ্যে। ফলে কোনও স্কুল-কলেজে ভর্তি হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পাননি তিনি। ১৫ বছর বয়সে লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে যে নৈশ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন, সেটিও বন্ধ হয়ে যায় তাঁর ভর্তির আট দিনের মাথায়। অন্য কোনও স্কুলে ভর্তি হবেন সে সুযোগও হয়নি। তবে তিনি ছোটবেলাতেই গানের তালিম নিতে ভুল করেননি। তাঁর গানের ওস্তাদ ছিলেন কমর উদ্দিন, সাধক বশির উদ্দিন ও শাহ ইব্রাহিম মোস্তান। মাত্র আট দিনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়ে বেড়ে ওঠা এ বাউল শিল্পী তাঁর তিরানব্বই বছরের জীবনে দেড় হাজারেরও বেশি গান রচনা করেছেন; করেছেন সুরারোপ। শাহ আবদুল করিমের জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান’, ‘কোন মেস্তুরি নাও বানাইলো’, ‘গাড়ি চলে না চলে না’, ‘আমি কুল হারা কলঙ্কিনী’, ‘বসন্ত বাতাসে সই গো’, ‘আমি এই মিনতি করিরে’, ‘রঙের দুনিয়া আর চাই না’, ‘সখি কুঞ্জ সাজাও গো’, ‘আমি বাংলা মায়ের ছেলে’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন থেকে শুরু, ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ ও সর্বশেষ ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ বাঙালিদের দাবি আদায়ের প্রতিটি সংগ্রামে তাঁর রচিত গান দেশের মানুষকে আন্দোলনের প্রেরণা জুগিয়েছে। বাউল পুত্র শাহ নূর জালাল জানান, জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সময় বিকালে শাহ আবদুল করিমের নিজ বাড়িতে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। রাতে স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে বাউল গান পরিবেশন করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আজ বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী
0
Share.