আট ছাত্রীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে মাদ্রাসা শিক্ষক

0

ঢাকা অফিস: নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় গ্রেপ্তার হওয়া সেই মাদ্রাসা শিক্ষক আট ছাত্রীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহান মিয়া এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত শুক্রবার ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে কেন্দুয়া পৌর শহরের বাদে আঠারবাড়ি এলাকায় ‘মা হাওয়া (আ.) কওমী মহিলা মাদ্রাসার’ শিক্ষক আবুল খায়ের বেলালীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলা হয়েছে বলে পুলিশ জানালেও পরে তা সংশোধন করে বলা হয়, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একইদিনে দুটি ধর্ষণের মামলা হয়েছে। নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহান মিয়া বলেন, “প্রথমে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে ওঠে। পরে আমরা ওই ছাত্রীটির সঙ্গে নিবিড়ভাবে কথা বলে জানতে পারি ধর্ষণের কথা। এছাড়া থানায় জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য দিয়েছেন গ্রেপ্তার আবুল খায়ের বেলালী।” তিনি জানান, গত এক বছর ধরে এই মাদ্রাসায় আছেন আবুল খায়ের। মাদ্রাসাটিতে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ৩৫ জন ছাত্রী রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্রী। শিক্ষক আবুল খায়ের বেলালীও থাকেন মাদ্রাসার আবাসিকে। “এই এক বছরে আবুল খায়ের বেলালী মাদ্রাসার আট ছাত্রীকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।” বেলালীর যৌন নির্যাতনের বিবরণ দিতে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, সময় সুযোগ বুঝে নিজের কক্ষে পছন্দমতো কোনো ছাত্রীকে ডেকে নিতেন। পরে তার হাত-পা টিপে দিতে বলতেন। এক পর্যায়ে ওই শিশুকে ধর্ষণ করতেন এবং কাউকে কিছু না বলতে শপথ করাতেন, ভয় দেখাতেন। বয়ানে সুবক্তা এই মাওলানা বেলালীর শিকার শিশুদের বয়স ৮ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। পুলিশ জানায়, শুক্রবার ধর্ষণের শিকার আট বছর বয়সী মেয়েটি মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। তার মা চট্রগ্রামে গৃহকর্মীর কাজ করেন। মাদ্রাসাটির ছাত্রী নিবাসে থেকে লেখাপড়া করে সে। সকালে খায়ের মেয়েটিকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন গিয়ে তাকে আটক করে পিটুনি দেয়। পরে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ গিয়ে খায়েরকে গ্রেপ্তার করে। কেন্দুয়া থানার ওসি রাশেদুজ্জামান জানান, শুক্রবার সকালে মা হাওয়া (আ.) কওমী মহিলা মাদ্রাসায় দ্বিতীয় শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে বেলালীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মেয়েটির চাচা। ওসি বলেন, “একই দিন আরেক ছাত্রীর বাবাও বেলালীর বিরুদ্ধে তার মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন।” ওসি আরও জানান, মেডিকেল পরীক্ষার জন্য দুই ছাত্রীকে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দির জন্য ওই দুই ছাত্রীকে বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হবে। গ্রেপ্তার মাওলানা আবুল খায়ের বেলালী ওই মাদ্রাসার মোহতামিম (পরিচালক) এবং সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের সোণাকানী গ্রামের ইব্রাহিম মিয়ার ছেলে।

Share.