স্পোর্টস ডেস্ক: ম্যাচ শুরুর আগে কেউ যদি বলতেন, মাঠের লড়াইটা হবেন এমন হাড্ডাহাড্ডি- তাহলে যে কেউ হেসেই উড়িয়ে দিতেন। ভাবতেন, পাগলের প্রলাপ বকছেন সেই ব্যক্তি। কিন্তু খেলাধুলায় মাঠে নামার আগে কোনোকিছু বলাই যে নিরাপদ নয়, তারই প্রমাণ মিললো আরও একবার। সাফল্য, সুনাম বা জনপ্রিয়তা- কোনোটিতেই স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার ধারেকাছে নেই চেক রিপাবলিকান ক্লাব স্লাভিয়া প্রাহা। এ দুই দলের লড়াইয়ে যে কেউ আশায় থাকবে গোল উৎসবের এক ম্যাচ দেখার। কিন্তু কিসের কী! রীতিমতো বার্সেলোনাকে কাঁপিয়ে দিয়েছে তুলনামূলক দুর্বল স্লাভিয়া। বুধবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ খেলতে স্লাভিয়ার মাঠে গিয়েছিল বার্সেলোনা। ঘরের মাঠে বার্সার বিপক্ষে সমানে সমান লড়েছে স্থানীয় দলটি। অনেকটা নিজেদের ভাগ্যের কাছেই হেরে গেছে তারা। কোনোমতে ২-১ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে বার্সেলোনা। সবার ধারণা অনুযায়ী ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই লিড নিয়েছিল আর্নেস্ত ভালভার্দের শিষ্যরা। দারুণ সাজানো গোছানো এক আক্রমণ থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ের আড়াআড়ি শটে জালে বল প্রবেশ করান বার্সা অধিনায়ক লিওনেল মেসি। এ নিয়ে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগের টানা ১৫ মৌসুমে গোল করার কৃতিত্ব দেখান তিনি। পুরো ম্যাচে বার্সেলোনার একচ্ছত্র আধিপত্যের এটিই যেনো ছিলো শেষ নিদর্শন। কেননা এরপর সমান তালে লড়তে শুরু করে স্লাভিয়া। একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে বার্সার রক্ষণভাগে। এমন নয় যে বার্সেলোনা লিড বাড়ানোর সুযোগ পায়নি, কিন্তু স্লাভিয়ার মুহূর্মুহূ আক্রমণের বিপরীতে বেশ অসহায়ই মনে হচ্ছিলো স্পেনের চ্যাম্পিয়নদের। তবে প্রথমার্ধে গোল শোধ করতে পারেনি স্লাভিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে সমতায় ফিরতে তাদের সময় লাগে মাত্র ৫ মিনিট। বার্সার রক্ষণভাগের দুই সেরা সেনানী জেরার্ড পিকে ও জর্দি আলবার মাঝে দিয়েই দারুণ এক শটে সমতাসূচক গোলটি করেন স্লাভিয়ার চেক রিপাবলিকান ডিফেন্ডার ইয়ান বোরিল। ম্যাচে সমতা ফেরালেও নিজেদের ভুলে আবার পিছিয়ে পড়ে স্লাভিয়া। মিনিট সাতেক বাদেই লিওনেল মেসির করা ফ্রিকিক থেকে জালের উদ্দেশ্যে শট নেন লুইস সুয়ারেজ। সেটি আবার পিটার ওলাইয়াঙ্কার বুকে লেগে জড়িয়ে যায় জালে। ফলে আত্মঘাতী গোলে লিড পেয়ে যায় বার্সেলোনা। শেষপর্যন্ত এই আত্মঘাতী গোলই পূর্ণ তিন পয়েন্ট এনে দেয় কাতালুনিয়ানদের। ম্যাচের শেষদিকে বার্সেলোনা গোলরক্ষক টের স্টেগান অসাধারণ কিছু সেভ না দিলে, হয়তো হার নিয়েই স্পেনে ফিরতে হতো দলটিকে। এ জয়ের পর ‘এ’ গ্রুপে শীর্ষস্থান পাকাপোক্ত হয়েছে বার্সেলোনার। তিন ম্যাচে ২ জয় ও ১ ড্রতে তাদের সংগ্রহ ৭ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে সমান ৪ পয়েন্ট করে রয়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ও ইন্টার মিলানের। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইতালিয়ান ক্লাবটি।
আত্মঘাতী গোলে লিড পায় বার্সেলোনা
0
Share.