আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে প্রাথমিক চুক্তি

0

ডেস্ক রিপোর্ট: আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে আলোচনায় বড় সাফল্য এসেছে। প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দিয়েছে দুপক্ষ। আফগান সরকারের প্রতিনিধি ও তালেবান নেতাদের মধ্যে কাতারের দোহায় দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। এতদিন সে আলোচনা মতবিরোধের কারণে এগোচ্ছিল না। কিন্তু গতকাল বুধবার যৌথ বিবৃতি দিয়ে আফগান সরকার ও তালেবান জানিয়েছে, তাদের মধ্যে প্রাথমিক চুক্তি হয়েছে। ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে আলোচনা কীভাবে এগোবে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে কীভাবে আলোচনা হবে, তারই রূপরেখা তৈরি হয়েছে এই প্রাথমিক চুক্তিতে। গত ১৯ বছরের মধ্যে এই প্রথম আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে লিখিত চুক্তি হলো। শান্তি আলোচনায় আফগান সরকারের প্রতিনিধি নাদের নাদেরি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, আলোচনার পদ্ধতি ও প্রস্তাবনা চূড়ান্ত হয়েছে। এবার নির্দিষ্ট কর্মসূচি অনুযায়ী আলোচনা চলবে। তালেবান প্রতিনিধিও টুইট করে এই বক্তব্য সমর্থন করেছেন।যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘একটি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি শান্তিচুক্তির এজেন্ডা কী হবে, তার খসড়া তৈরি করবে।’  আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সাদিক সিদ্দিকি টুইট করে জানিয়েছেন, ‘(প্রাথমিক চুক্তির পর) এবার মূল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এর মধ্যে আফগান জনগণের প্রধান দাবি—যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গও আছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও চুক্তির জন্য দুপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘এই চুক্তি হলো মতৈক্যে পৌঁছনোর জন্য দুপক্ষের নিরন্তর চেষ্টা ও ইচ্ছার যোগফল। দুপক্ষ যাতে সহিংসতা কমিয়ে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে পারে, তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করবে।’ জাতিসংঘের আফগান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি জালমে খালিজাদ জানিয়েছেন, ‘দুপক্ষের মধ্যে তিন পাতার প্রাথমিক চুক্তি হয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক রোডম্যাপ তৈরি এবং সামগ্রিক যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য বিধান ও প্রক্রিয়া ঠিক করা হয়েছে। সবাই মতৈক্যে পৌঁছেছেন।’ আফগানিস্তানে সরকারি বাহিনী বনাম তালেবানের মধ্যে লড়াই এখনো চলছে। মাঝে মধ্যেই আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। এরই মধ্যে দোহায় কয়েক মাস ধরে দুপক্ষের আলোচনা চলছিল। তালেবান প্রথমে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কথা বলতে রাজি ছিল না। তাদের বক্তব্য ছিল, আলোচনা অনেকটা এগোলে এ নিয়ে কথা বলা যেতে পারে। গত মাসে একবার মতৈক্যের খুব কাছে পৌঁছেছিল দুপক্ষ। কিন্তু চুক্তির প্রস্তাবনা নিয়ে শেষ সময়ে বেঁকে বসে তালেবান। ফলে তখন আর প্রাথমিক চুক্তির ঘোষণা করা যায়নি। তালেবানের দাবি ছিল, চুক্তিতে আফগান সরকার কথাটা রাখা যাবে না। কারণ, বর্তমান সরকারকে তালেবান জনগণের আসল প্রতিনিধি বা ন্যায়সঙ্গত সরকার বলে মানে না। এই পুরো প্রক্রিয়ার বিষয়ে ওয়াকিবহাল এক পশ্চিমা কূটনীতিক রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ‘দুপক্ষই কিছু বিবাদের বিষয় পাশে সরিয়ে রেখে এই চুক্তি করেছে। কারণ, দুপক্ষই জানে পশ্চিমা দেশগুলোর আর ধৈর্য থাকছে না। এই দেশগুলো চাইছে, আলোচনা এগোক।’আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান তালেবান ও আফগান সরকারের চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘এই চুক্তি প্রমাণ করে দিচ্ছে, দুপক্ষই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নিতে চাইছে।’

Share.