লাইফস্টাইল ডেস্ক: পাকা আম সবার পছন্দের তালিকায় রয়েছে। স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় ফল আম। শুধু স্বাদ আর গন্ধেই নয়, আম প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরা। এই মওসুমি ফলটিতে রয়েছে শরীরের জন্য উপকারী নানান উপাদান। পুষ্টিবিদরা বলেন, আম নানান পুষ্টি উপাদানে ভরপুর যা শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি কর্মশক্তি যোগাতেও সহায়তা করে। তাই করোনার ক্রান্তিকালে সবারই বেশি বেশি আম খাওয়া উচিত।পাকা আমে রয়েছে আয়রণ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন সি, রিভোফ্লেভিন, থায়ামিন, খনিজ লবণ, শ্বেতসার এবং ভিটামিন বি-১ ও বি-২। এই উপাদানগুলো শরীরের নানা উপকারে আসে।আম খেলে যে উপকারগুলো আপনি পেতে পারেন, তার বিস্তারিত জেনে নিন…
* পাকা আম আমাদের ত্বক সুন্দর, উজ্জ্বল ও মসৃণ করে। শুধু তাই নয়, এটি আমাদের ত্বকের ভেতর ও বাইরে থেকে উভয়ভাবেই সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। আম আমাদের ত্বকের
লোমের গোড়া পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ও ব্রণের সমস্যা সমাধানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
* গাছপাকা আমে পর্যাপ্ত পরিমাণে খনিজ লবণের উপস্থিতিও রয়েছে। এই খনিজ লবণ আমাদের শরীরের দাঁত, নখ, চুল ইত্যাদি মজবুত করার ক্ষেত্রে উপকারী ভূমিকা পালন করে।
* সাধারণত পাকা আম ত্বকের লোমের গোড়া পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ফলে মুখের ও নাকের উপর জন্মানো ব্ল্যাকহেড দূর করতে অনেকাংশে সাহায্য করে। আপনি যদি প্রতিদিন
১০০ গ্রাম পাকা আম খান তাহলে আপনার মুখের কালো দাগ দূর হবে।
* পাকা আমের আঁশে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় তা হজমে সহায়তা করে থাকে। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে এনজাইম থাকায় আম আমাদের শরীরের প্রোটিন
অণুগুলো ভেঙ্গে ফেলতে সাহায্য করে যা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
* আমে প্রায় ২৫ রকমের বিভিন্ন কেরাটিনোইডস উপকারী ব্যাকটেরিয়া আছে। যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে।
* আমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স। এই ভিটামিন আমাদের শরীরের স্নায়ুগুলোতে অক্সিজেনের সরবরাহ সচল রাখতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরকে রাখে পুরোপুরি সতেজ। যার ফলে আম খেলে খুব দ্রুত ঘুম আসে।
* আমে রয়েছে বেটাক্যারোটিন, ভিটামিন ই এবং সেলেনিয়াম। এসব উপাদান থাকায় পাকা আম হার্টের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। আমাদের হার্টকে সুস্থ ও সবল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে আম।
* আপনি যদি প্রতিদিন এককাপ আম খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার শরীরে ভিটামিন ‘এ’ এর চাহিদার প্রায় পঁচিশ শতাংশের যোগান দিতে পারবে। ভিটামিন ‘এ’ আমাদের চোখের জন্য খুবই উপকারী। এটি আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা করে।
* পাকা আম আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কারে সহায়তা করে। আমে প্রচুর পরিমাণে এসিড থাকে। যেমন- টারটারিক এ্যাসিড, ম্যালিক এ্যাসিড ও সাইট্রিক এ্যাসিড যা আমাদের শরীরে অ্যালকালাই বা খার ধরে রাখতে সহায়তা করে অনেকাংশেই।
* আমে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা কিনা শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। স্তন, লিউকেমিয়া, কোলন প্রোস্টেট ক্যান্সারের মত মারাত্মক ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এতে প্রয়োজনীয় এনজাইমও পাওয়া যায়।
*. পাকা আম পটাশিয়ামসমৃদ্ধ হওয়ায় এটি আমদের হার্টবিট ও রক্তস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। আমাদের হার্টবিটকে সচল রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে আম।
* আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। তবে পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমে ভিটামিন-সি এর পরিমাণ বেশি। যা আমাদের দাঁত ও হাড় গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
* আমাদের শরীরের ক্ষয়রোধ করে আম। প্রতিদিন আম খেলে দেহের ক্ষয়রোধ হবে এবং স্থূলতা কমিয়ে শারীরিক গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।
* আমে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’। সেই সাথে আরও আছে ফাইবার যা সিরাম কোলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টরল যেমন কম ঘনত্বের লাইপোপ্রটিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। অতএব বুঝতেই পারছেন, আমের উপকারিতা অপরিসীম। অবশ্যই আপনি এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আম খাবেন। তবে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত আম খেতে হবে। বাজারের ফরমালিনযুক্ত আমের উপকারিতা থেকে অপকারিতাই বেশি। এই বিষয়ে সাবধান হবেন।