ডেস্ক রিপোর্ট: থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার বদলে সম্মেলনে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে হোয়াইট হাউস। গত বছরও এই সম্মেলনে যোগ দেননি ট্রাম্প। ফলে তার অনুপস্থিতিতে সেখানে গুরুত্ব বাড়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। সম্মলেন শেষে তোলা গ্রুপ ছবিতে আয়োজক দেশ সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লং-এর পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন পুতিন। অন্য পাশে একজনের পরে দাঁড়ান যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পেন্স। ওই সম্মেলনেই সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন পরিস্থিতি আসতে পারে যখন এশিয়ার দেশগুলোকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে কোনও একটিকে বেছে নিতে হবে। তবে তেমনটা না হয়, এটাই সবার প্রত্যাশা। তবে এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার এ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অনুপস্থিতির ঘটনায় হতাশ মার্কিন মিত্র হিসেবে পরিচিত আসিয়ান দেশগুলো। তাদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র এভাবে এ অঞ্চল থেকে সরে গেলে ক্রমেই এখানে প্রভাব বাড়বে চীনের। সংগত কারণেই এ অঞ্চলে চীনা আধিপত্য মেনে নিতে নারাজ আসিয়ানের একাধিক সদস্য দেশ। দক্ষিণ চীন সাগরের কিছু এলাকা নিয়ে মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, তাইওয়ান, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের সঙ্গে বিতর্ক রয়েছে চীনের। এর মধ্যে তাইওয়ান ছাড়া বাদবাকি সবকটি দেশই আসিয়ানের সদস্য। এই দেশগুলোর দাবি, বলপূর্বক দক্ষিণ চীন সাগরে তাদের সমুদ্রসীমায় দখলদারিত্ব বিস্তার করছে বেইজিং। ৩১ অক্টোবর শুরু হয়ে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এবারের আসিয়ান সম্মেলন। এতে অপেক্ষাকৃত নিচু পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। সচরাসর সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানরা এ সম্মেলনে নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধি করে থাকেন। তবে গতবার নিজের বদলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন ট্রাম্প। আর এবার মার্কিন প্রতিনিধি দলে সবচেয়ে সিনিয়র সদস্য হিসেবে থাকছেন দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এ বছরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের এক প্রতিবেদনে এ অঞ্চলকে আমেরিকার ভবিষ্যতের জন্য এককভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ধারাবাহিকভাবে আসিয়ান সম্মেলনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকছেন ট্রাম্প। অথচ সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার মেয়াদে এ সম্মেলনের প্রায় প্রতিটি আয়োজনে অংশ নিয়েছেন। শুধু রাষ্ট্রীয় শাটডাউনের কারণে ২০১৩ সালের আয়োজনে অংশ নিতে পারেননি তিনি। ক্ষমতায় আসার পর সর্বশেষ ফিলিপাইনে অনুষ্ঠিত ২০১৭ সালের আসিয়ান সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে সেবারও পুরো সেশনে উপস্থিত ছিলেন না তিনি। তবে এরপর থেকে আসিয়ানের আর কোনও সম্মেলনেই অংশ নিচ্ছেন না তিনি। কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এমন অনুপস্থিতির ফলে এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। বিশেষ করে ২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রশাসন ১১ জাতির টিপিপি চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ায় এমন প্রশ্ন আরও জোরালো হয়ে উঠবে। সূত্র: সিএনবিসি, রয়টার্স।