ডেস্ক রিপোর্ট: তুরস্কের বিখ্যাত আয়া সোফিয়া মসজিদে ৮৭ বছর পর ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐতিহ্য অনুসারে শান্তির প্রতীক তলোয়ার হাতে নিয়ে মিম্বারে খুতবা পাঠ করেন তুরস্কের ধর্মীয় বিষয়ক অধিদপ্তর দিয়ানাতের প্রধান অধ্যাপক ডা. আলী এরবাস।আয়া সোফিয়া ১৪৫৩ সালে ইস্তাম্বুল বিজয় থেকে ১৯৩৪ সাল জাদুঘরে রূপান্তরিত হওয়ার আগে প্রায় ৪৮১ বছর আয়া সোফিয়া মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত করে আসছিলেন মুসল্লিরা। ৮৬ বছর পর আয়া সোফিয়া মসজিদ হিসেবে ব্যবহারের রায় দেয় দেশটির আদালত। পরে ৮৭ বছর পর প্রথম ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়া হলো আয়া সোফিয়ায়।করোনা মহামারির কারণে সীমিত সংখ্যক লোক আয়া সোফিয়া মসজিদের ভেতরে নামাজের সুযোগ হয়েছে। যারা ভেতরে নামাজ পড়ার সুযোগ পাননি তারা মসজিদের আঙিনা ও স্কোয়ারে অবস্থান নেন।
অধ্যাপক ডা. আলী এরবাস খুৎবায় বলেন, ঈদের উৎসব সমূহ একই বিশ্বাসে বিশ্বজুড়েই ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ গভীরভাবে অনুভূত হয়, যা আমাদের রবের ঘোষণা। একই সভ্যতার সদস্যদের পারস্পরিক আনন্দ এবং উৎসাহের দিন ঈদ।তিনি আরও বলেন, আজকের উৎসব আমাদের বিশ্বে কিছুটা বেদনাদায়ক, বেদনা এবং অশ্রু দ্বারা বেষ্টিত। আমাদের প্রথম কেবলা মসজিদ আল-আকসা দখল করার প্রয়াসে রমজানের দিনগুলোতে সকল মুসলমানদের জন্য প্রচুর দুঃখ ও বেদনা এনেছে। কারণ পূর্ব তুর্কিস্তান থেকে ইয়েমেন, আরাকান থেকে সিরিয়া পর্যন্ত মুসলিম ভূগোলের নিপীড়িত শহরগুলো থেকে কান্নাকাটি আমাদের হৃদয়কে গভীরভাবে আহত করেছে।অধ্যাপক ডা. আলী এরবাস খুৎবায় বলেন, হযরত মুহাম্মদ (স.) হাদিসে মুসলমানদেরকে দেহের অঙ্গগুলোর সঙ্গে তুলনা করেছেন এবং ঘোষণা করেন যে সমস্ত মুমিনকে একজন মুমিনের কষ্ট ও যন্ত্রণা অনুভব করা উচিত এবং যে মুসলিম নিজের জন্য যা চান তা অন্যের জন্য না চায় সে পরিপূর্ণ মুসলমান না।
প্রসঙ্গত, আয়া সোফিয়া ৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে বাইজান্টাইন সম্রাজ্যের অর্থডোক্স খ্রিস্টানদের সর্ববৃহৎ গির্জা হিসেবে নির্মাণ করা হয়। ১৪৫৩ সালে সুলতান মুহাম্মাদ ফাতিহ ইস্তাবুল বিজয় করে তা ক্রয় করেন এবং মসজিদ হিসেবে ওয়াকফ করে দেন বলেও জানা যায়। ৪৮১ বছর পর ১৯৩৪ সালের ২৪ নভেম্বর মোস্তফা কামাল (আতাতুর্ক) পাশার মন্ত্রীপরিষদ এটিকে জাদুঘরে পরিণত করে। ৮৬ বছর পর আবার তা মসজিদ হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত দেয় তুর্কি আদালত।