ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর বিপর্যয়, কড়া সমালোচনা রমজান কাদিরভের

0

ডেস্ক রিপোর্ট: সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ইজিয়ামে পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছে রুশ বাহিনী। রুশ সেনাদের এমন বিপর্যয়ের পর তাদের কর্মক্ষমতা নিয়ে কড়া সমালোচনা জানিয়েছেন পুতিন মিত্র চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ। শনিবার টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে পোস্ট করা ১১ মিনিটের এক ভয়েস বার্তায় তিনি বলেছেন, পরিকল্পনা মতো ক্যাম্পেইন হচ্ছে না। ক্রেমলিন-নিযুক্ত চেচনিয়ার নেতা কাদিরভ বলেন, ‘আজ বা কাল যদি বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনায় পরিবর্তন না আনা হয়, তাহলে আমি দেশটির নেতৃত্বের কাছে যেতে বাধ্য হব যাতে তাদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা যায়। আমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো কৌশলবিদ নই। কিন্তু এটা পরিষ্কার যে ভুলগুলো হয়েছে। আমি মনে করি তারা কয়েকটি উপসংহার টানবে।’ নোভায়া গেজেটা ইউরোপ তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, সমস্ত বসতি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে ফিরে আসবে। রমজান আরও বলেন, ‘সেখানে আমাদের লোক রয়েছে, যোদ্ধারা এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত। আরও ১০ হাজার যোদ্ধা তাদের সঙ্গে যোগ দিতে প্রস্তুত। অদূর ভবিষ্যতে আমরা ওডেসা পৌঁছাব।’ রাশিয়ান সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে আক্রমণের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ে পরাজিত হওয়ার পর তিনি এমন সমালোচনা করেন। রাশিয়ান জাতীয়তাবাদীরা রবিবার ইউক্রেন যুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত করার জন্য পুতিনকে অবিলম্বে পরিকল্পনা পরিবর্তন করার জন্য ক্ষুব্ধ হয়ে আহ্বান জানিয়েছে। তার আগেরদিন উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে প্রধান ঘাঁটি পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল মস্কো। মার্চ মাসে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে সেনাদের ফেরত পাঠানোর পর ইজিয়ামে দ্রুত পতন ছিল রাশিয়ার সবচেয়ে খারাপ সামরিক পরাজয়। পরাজয়ের বিষয়ে মস্কোকে প্রায় সম্পূর্ণ নীরব থাকতে দেকা গেছে। এমনকি উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে যা ঘটেছিল তার কোনো ব্যাখ্যাও দেয়নি মস্কো। মস্কোর এমন ভূমিকা সোশ্যাল মিডিয়াতে কিছু যুদ্ধপন্থী ভাষ্যকার এবং রাশিয়ান জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার ভিডিও ফুটেজ পোস্ট করে বলেছে, পরাজয়ের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খারকিভ অঞ্চলে সেনা পাঠানো হয়েছে। রবিবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, রুশ বাহিনী এই অঞ্চলে ইউক্রেনের অবস্থানগুলিতে বিমানবাহী সেনা, ক্ষেপণাস্ত্র এবং কামান দিয়ে হামলা করেছে। সরেজমিনে কিয়েভ থেকে আল-জাজিরার রিপোর্টে বলা হয়েছে, অনেক রাশিয়ানপন্থী টেলিগ্রাম চ্যানেল বলছে এটি একটি পরাজয়। উচ্চ-প্রোফাইল সম্পন্ন এক সামরিক বিশ্লেষক বলেছেন, তাদের সৈন্যরা অপারেশনাল সংকটে রয়েছে এবং ইউক্রেনীয়রা এই সুযোগে দখল করার যুদ্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার-ইন-চিফ পুতিন বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু কেউই রবিবার মধ্যাহ্ন পর্যন্ত এই পরাজয়ের বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেননি। মুসকোভাইটসকে পুতিন বলেছেন, ‘আমরা মস্কো নিয়ে গর্ব করি। এই শহরের গৌরবান্বিত ইতিহাস, ঐতিহ্য, এর প্রচীনত্ব, আধুনিকতা এবং গতিশীল জীবনের জন্য ভালোবাসি। এর রয়েছে আরামদায়ক পার্ক, গলি ও রাস্তার মোহনীয়তা এবং ব্যবসায়িক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রাচুর্যতা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধে জবাব দেয়নি। নিয়মিত টেলিগ্রাম চ্যানেল অনুসরণ করা কিছু ক্রেমলিন সমর্থক যুদ্ধ সংবাদদাতা, প্রাক্তন এবং বর্তমান চাকুরীজীবীরা পরাজয়ের জন্য মন্ত্রণালয়কে অভিযুক্ত করেছেন।

Share.