বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৬

ইউরোপেই করোনাভাইরাসে ৩০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে

0

ডেস্ক রিপোর্ট: এপ্রিলের প্রথম দিন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে চুয়াল্লিশ হাজারে, যার মধ্যে কেবল ইউরোপেই সংখ্যাটা ৩০,০০০ ছাড়িয়েছে। চীন ও ইরানের পর করোনাভাইরাস মূল আঘাতটি হানে ইতালিতে। তবে করোনাভাইরাসের কেন্দ্র এখন ইতালি থেকে সরে ক্রমশ স্পেনের দিকে যাচ্ছে। স্পেন এখন বিশ্বের তৃতীয় দেশ যেখানে এক লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাস আপডেট বলছে, স্পেনে আজ মৃতের সংখ্যা মোট নয় হাজার ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ, শুধুমাত্র স্পেন ও ইটালিতেই মারা গেছে মোট ২০ হাজারের বেশি মানুষ। টানা পাঁচদিন স্পেনে ৮০০ বা তার চেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে। তবে গোটা ইউরোপের অবস্থাই এখন শোচনীয়। চীনে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার দুই’শর মতো। এর চেয়ে বেশি মারা গেছে কেবল ফ্রান্স, ইটালি ও স্পেনে। ইটালিতে মৃতের সংখ্যা ১২,৪২৮। যুক্তরাজ্যে মৃতের সংখ্যা সতের শ ছাড়িয়েছে। নেদারল্যান্ডসে ১ হাজার ছাড়িয়েছে। বেলজিয়ামে আট শর বেশি মানুষ মারা গেছে। জার্মানীতেও আট শ’র কাছাকাছি মানুষ করোনাভাইরাসে মারা গেছেন। সুইজারল্যান্ডে পাঁচ শর কিছু কম মানুষ মারা গেছে। তুরস্ক, সুইডেন ও পর্তুগালেও দেড় শর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই বৈশ্বিক মহামারিতে। ওদিকে অস্ট্রিয়ায় মারা গেছে একশোর মতো মানুষ।ইউরোপ পুরো বিশ্ব থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন আছে। ১২ই মার্চ ইতালিতে লকডাউন দেয়া হয়। এরপর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ঘোষণা দেয় পুরো ইউরোপজুড়ে লকডাউন দেয়ার কথা। ১৮ই মার্চ থেকে সেটা বলবৎ আছে। আজ ইরানে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়েছে, দেশটির সরকারি হিসেব অনুযায়ী। যদিও দেশটি করোনাভাইরাসের তথ্য লুকোচ্ছে বলে প্রতিবেদন করা হয়েছে। দেশটির চিকিৎসকরাও বিবিসিকে বলেছে যে দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার তুলনায় সরকারি হিসেব অনেক কম। এখন পর্যন্ত পুরো বিশ্বে আট লাখ মানুষের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে বিবিসির রাজনৈতিক সম্পাদক লরা কুয়েন্সবার্গ বলছেন যুক্তরাজ্যে টেস্ট কম করা হচ্ছে, এটা একটা রাজনৈতিক সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি: করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ ইতালি। মঙ্গলবারে পাওয়া আনুষ্ঠানিক তথ্য অনুযায়ী আগের ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুর সংখ্যা ৮৩৭ জন। এর আগে সোমবার মারা যায় ৮১২ জন। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১২ হাজার ৪২৮ জন। বেড়েছে নতুন সংক্রমণের সংখ্যাও, মঙ্গলবার সংক্রমণ হয়েছে ২,১০৭ জনের মধ্যে, যেই সংখ্যাটি আগেরদিন ছিল ১,৬৪৮ জন। তবে আগের সপ্তাহের একই সময়ের তুলনায় কমেছে সংক্রমণের হার। ফ্রান্সের হাসপাতালগুলোতে আগের ২৪ ঘন্টায় নতুন ৪৯৯ জনের মৃত্যু নথিবদ্ধ হয়েছে। এনিয়ে দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩,৫২৩। প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে দৈনিক মৃত্যুর হিসেবে এটিই ছিল ফ্রান্সে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা। বেলজিয়ামে ১২ বছর বয়সী এক শিশু মারা গেছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে। এটিকে ধারণা করা হচ্ছে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে ইউরোপে সবচেয়ে কম বয়সী কারো মৃত্যু হিসেবে। বেলজিয়ামে এখন পর্যন্ত মোট মারা গেছে ৭০৫ জন। রাশিয়ার আইনপ্রণেতারা কিছু ‘অ্যান্টি-ভাইরাস’ আইন পাস করেছেন, যার মধ্যে কোয়ারেন্টিনের নিয়ম না মানলে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের নিয়মও রয়েছে। ভারতে রাজধানী দিল্লিতে হওয়া এক ধর্মীয় জমায়েতে অংশ নেয়া শত শত মানুষকে খুঁজছে কর্তৃপক্ষ। ঐ জমায়েত থেকে একাধিক ক্লাস্টারের মধ্যে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়েছে। মিয়ানমার করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে। কয়েক সপ্তাহ আগে যদিও মিয়ানমার দাবি করেছিল যে তাদের দেশে কেউ করোনাভাইরাস আক্রান্ত নয়, তবে বিশেষজ্ঞরা সেই দাবির বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। মিয়ানমারে বর্তমানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ জন।

 

 

 

সূত্র : বিবিসি বাংলা

Share.