ডেস্ক রিপোর্ট: গত কয়েকদিনে ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলায় আহত হয়ে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে কাঁতরাচ্ছে শিশু, নারীসহ শত শত মানুষ। শনিবার উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী ক্যাম্পের একটি বাড়ির সামনে আমিনা আশকিনানের দুজন নাতি খেলাধুলা করছিল। তাদের একজনের নাম মায়ার। তার ১০ বছর বয়স ও আরেকজনের নাম আহমেদ। তার ৯ বছর বয়স। কিন্তু হঠাৎ ইসরায়েলের সেনাদের হামলায় তারা মারাত্মক আহত হয়। তৎক্ষণাৎ দুজনকে গাজা শহরের শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার কক্ষে মায়ারকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয়। অপারেশনের পর দুইভাই আশঙ্কামুক্ত হলেও তারা বোমার আতঙ্কে সময় পার করছে। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার পর ফিলিস্তিনের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জ্বালানি সংকটের কারণে হাসপাতালের জেনারেটর সার্ভিসহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে। ৬৫ বছর বয়সী হাসপাতালের এক নারী আশকিনান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি খুবই মারাত্মক এবং কল্পনাতীত। আমরা যে কষ্ট সহ্য করছি কোনো মানুষ তা সহ্য করতে পারবে না। শিশুসহ আমাদের মতো বেসামরিক নাগরিকদের কী অপরাধ। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েলের সেনাদের তিনদিনের বোমা হামলায় অন্তত ১৫ শিশুসহ ৪৪ জন নিহত হয়েছেন।গত রবিবার শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মত আবু সালমিয়া আল জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েলের দখলদার বাহিনীর জন্য আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়া একটি অনিবার্য ফল ছিল। বর্তমানে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে হাসপাতালের বিভিন্ন জরুরি সেবা যেমন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট, অক্সিজেনসহ অন্যান্য সেবা দেওয়া মারাত্মক বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে ২৫ জনের বেশি রোগী রয়েছেন। তাদের জুরুরি সার্জারি করা দরকার। ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে অসুস্থ অবস্থায় অনেকে রয়েছে। এছাড়া, শিশু, নারী ও বয়স্ক নারীরা আহত অবস্থায় হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আহত ২৩ বছর বয়সী আহমেদ আবু রমাদান বলেন, অন্যান্য দিনের মতো দুপুরের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নেওয়ার সময় আকস্মিকভাবে বাড়ির বাইরে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আমার বোন, বাবা ও মা আহত হয়। আমি সবাইকে বাঁচানোর জন্য চিৎকার করছিলাম। সৌভাগ্যবশত হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর পরিবারের সবাই সুস্থ রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে জ্বালানি সংকটের কারণে হাসপাতালের জরুরি সেবা বন্ধের উপকূম হলে তা আমাদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের সমতুল্য হবে। গাজার নিরীহ মানুষের উপর ইসরায়েলের সেনাদের হামলা বন্ধে বিশ্ব কবে পদক্ষেপ নিবে? গত বছরের ১১ মে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় ২৬০ জনের বেশি প্যালেস্টাইনের নাগরিক নিহত হয়। এছাড়া দুই হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়। গত শুক্রবার নতুনভাবে গাজায় হামলা করে ইসরায়েলের বাহিনী। ফিলিস্তিনের দাবি, আগামী নভেম্বরে নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিতের জন্য তাদের উপর হামলা করেছে দখলদার বাহিনী।
ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলায় কাঁতরাচ্ছে শিশু-নারীসহ শত শত মানুষ
0
Share.