ঢাকা অফিস: ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা শুধু একটি পরিবার নয়, বরং স্বাধীনতার বিশ্বাসের ওপর বড় আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (৩০ আগস্ট) সকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এই কথা বলেন তিনি। করোনা পরিস্থিতির কারণে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে উপস্থিত ছিলেন নেতা-কর্মীরা। আর গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময়, ৭৫ পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাতির পিতা কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিলেও কেউ কেউ জাতির জনকের সমালোচনায় মুখর ছিলো।তিনি জানান, অনেকে গণতন্ত্রের কথা বলে। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে এমন দিন খুব কমই গেছে, যেদিন তার হাতে মানুষ খুন হয়নি। ৭৫ পরবর্তী সময়ে সারাদেশে খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিলো তারা। তার আমলেই জাতির পিতার হত্যাকারীদের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। তো এখানে গণতন্ত্র কোথায়?১৯৭৫ সালের পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ‘অগণিত নেতাকর্মীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে’ বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মার্শাল-ল অর্ডিন্যান্স দিয়ে যারা ক্ষমতায় আসে তারা তো গণতন্ত্র দিতে পারে না। আমাদের দেশে অনেকেই আছেন যারা, জ্ঞানী-গুণী মানুষ আছেন। যারা গণতন্ত্র খুঁজে বেড়ান। যখন ইমার্জেন্সি জারি হয় বা মিলিটারি ডিক্টেটর ক্ষমতায় আসেন, তারা তখন গণতন্ত্রের স্বাদ পান। কিন্তু গণতান্ত্রিক পরিবেশে তারা গণতন্ত্র পায় না। অর্থাৎ তাদের চরিত্রটাই হচ্ছে চাটুকারিতা করা।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা এভাবে হঠাৎ করে ক্ষমতা দখল করে তারা এমন তোষামোদকারীদের হায়ার করে। বুদ্ধিজীবীদের নির্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা সবসময় এভাবে ব্যবহার হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে। সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকলে, এদের মূল্য থাকে না। যতোই তারা বুকে লিখে রাখুক না কেনো- ইয়্যুজ মি! তাদেরকে তো গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবহার করবে না। আর তখনই তাদের চিৎকার দেশে গণতন্ত্র নাই, এটা নাই ওটা নাই!’জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করাই তো মূল লক্ষ্য। একমাত্র গণতান্ত্রিক সরকার হলেই সেটা সম্ভব। ৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পরবর্তী সময়ে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মানুষ বুঝতে পেরেছে যে, সরকার জনগণের কল্যাণ করে।দলের ভিন্ন মতাদর্শের কর্মীদের অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গেও মহানগর আওয়ামী লীগের এই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা। তার মতে, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে এদিক ওদিক থেকে কিছু লোক জোটে এবং দলের ভেতরে এসে তারা নানা রকম অঘটন ঘটায়, অপকর্ম করে, যার বোঝাটা দলকে বয়ে নিয়ে বেড়াতে হয়।তিনি জানান, “যে কারণে আমি বারবার শুরু থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ার করেছিলাম যে এই ধরনের যারা… বিশেষ করে মিলিটারি ডিক্টেটরদের হাতে তৈরি করা যে সমস্ত রাজনৈতিক দল, সেগুলো যারা করে এসেছে বা যুদ্ধাপরাধীদের সাথে যারা ছিল, আমাদের দলে যেন তারা না আসে। এলে দলেরই ক্ষতি করে।’বিভিন্ন সময়ে তারাই অঘটন ঘটায় মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমাদের ভালো ভালো নেতাকর্মীদের তারাই হত্যা করে। বাইরে আসে কি_দলের কোন্দল। কিন্তু খুঁজলে দেখা যায় যে এরা হয় এখান থেকে সেখান থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে, বা তখন খুব ভালো ব্যবহার করে এমনভাবে চলে এসেছে যে আমাদের কেউ কেউ দল ভারি করার জন্য তাদেরকে কাছে টেনে নিয়েছে। কিন্তু এটা নেওয়া আমাদের জন্য সবচেয়ে ক্ষতির কারণ! তাঁর মতে, আওয়ামী লীগ তৃণমূল থেকে সুসংগঠিত দল। তাই জাতির পিতার আদর্শ নিয়েই সবাইকে রাজনীতি করতে হবে।
এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবীর বুকে লেখাই থাকে ‘ইয়্যুজ মি’: প্রধানমন্ত্রী
0
Share.