ঢাকা অফিস: দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্র্রুত বাড়তে থাকালেও আগের মত ‘লকডাউনের’ কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বুধবার স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত যখন হয়, তখন আমরা জানিয়ে দেব। লকডাউনের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেয় না।” সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ফের ‘লকডাউনের’ সুপারিশ করবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “এই মুহূর্তে আমরা পরীক্ষা নিচ্ছি। আমরা স্বাস্থ্যবিধির ওপর বিশেষ জোর দিচ্ছি। স্বাস্থ্যসেবার ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। “যেসব জায়গার কারণে রোগী বাড়ছে, সংক্রমণ বাড়ছে, ওই জায়গাগুলো যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, তাহলে আমি মনে করি সংক্রমণের হার কমে যাবে, রোগী বাড়বে না। কাজেই উৎপত্তিস্থলগুলোকে আগে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, তারপর আমরা অন্যকিছু চিন্তা করব।” ‘উৎপত্তিস্থল’ বলতে কী বোঝাচ্ছেন- সেই ব্যাখ্যায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী পর্যটনের স্থানগুলোর কথা বলেন। “পর্যটনের জায়গাগুলো থেকে সংক্রমণ বেশি হয়েছে। আমরা চাই সেগুলো সীমিত হোক। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।” গতবছর করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও মার্চের শেষ দিকে শুরু হয় ‘লকডাউনের’ বিধিনিষেধ। অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কল-কারাখানা, বিপণি বিতান ও উপাসনালয় বন্ধ রাখার পাশাপাশি যানবাহন চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে সবাইকে যার যার বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়ায় দেশের ১৭ কোটি মানুষও ঘরবন্দি দশার মধ্যে পড়ে। টানা ৬৬ দিনের লকডাউন ওঠার পর ৩১ মে থেকে অফিস খোলার পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচালের অনুমতি দেয় সরকার। ধীরে ধীরে শুরু হয় ফ্লাইট চলাচল। অগাস্টে বিনোদন কেন্দ্রও খুলে দেওয়া শুরু হয়। ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রেখেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখার ভাবনা থেকে মাঝে পুরো দেশকে লাল, হলুদ ও সবুজ জোনে ভাগ করে পরিস্থিতি অনুযায়ী লকডাউনের বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনা হয়েছিল। পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি এলাকায় সেই ব্যবস্থা চালানোও হয়েছিল। কিন্তু পরে আর তা এগোয়নি। ডিসেম্বরের পর দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকলেও চলতি মার্চের শুরু থেকে তা আবার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গতবছরের জুলাইয়ের পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মত দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়েছে। ফলে হাসপাতালগুলোর কোভিড ইউনিটে শয্যা পাওয়া নিয়ে সঙ্কট তৈরির খবর আসছে গণমাধ্যমে। জাহিদ মালেক বলেন, ঢাকার পাশাপাশি ঢাকার কাছের জেলাগুলোতেও কোভিড ইউনিট বাড়াতে বলা হয়েছে। “সংক্রমণ ঠেকানো এবং আক্রান্তদের চিকিৎসায় সরকার আন্তরিক। তবে রোগের বিস্তার রোধে মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। রোগের উৎপত্তি কমাতে হবে। কারণ রোগী যে হারে আসছে, এভাবে চলতে থাকলে এই ব্যবস্থায় কুলাবে না। দেশকে রক্ষা করতে হলে, অর্থনীতিকে রক্ষা করতে হলে স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলতেই হবে। বেশি ঘোরাঘুরি কমিয়ে ফেলতে হবে।”
এখনও হয়নি ‘লকডাউনের’ সিদ্ধান্ত : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
0
Share.