ঢাকা অফিস: আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে এমন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, ‘এখনো সময় আছে পদত্যাগ করুন।’ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপি আয়োজিত প্রতীকী অনশনে তিনি একথা বলেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আয়োজিত এ কর্মসূচি সকাল দশটায় শুরু হয়ে বেলা তিনটার দিকে শেষ হয়। এদিকে শুরুর দিকে বক্তব্য দিলেও অনশনে সমাপনী বক্তব্য রাখেননি মির্জা ফখরুল। কারণ শেষ বেলায় সভাপতি আমান উল্লাহ আমান বক্তব্য দেয়ার পরে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বক্তব্য রাখেন। এরপর মির্জা ফখরুলের বক্তব্য দেয়ার কথা থাকলেও নেতাকর্মীদের হুড়াহুড়ির কারণে তিনি আর কথা বলেননি। অবশ্য ড. মোশাররফের বক্তব্যের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লা চৌধুরী পানি পান করিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের অনশন ভাঙান। ফখরুল বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ নিত্যপণ্যের দাম কমাতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে এমন দাবি করে তিনি বলেন, কাল থেকে রোজা, কিন্তু সীমাহীন ব্যর্থতা আর সরকারের সিন্ডিকেটের লোভের কারণে নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী। এ ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টিকারী আওয়ামী লীগকে সরাতে না পারলে জনগণ স্বস্তি পাবে না। এসময় তিনি অনশনে অংশ নিতে আসা বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তবে আটককৃতদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করতে পারেননি তিনি। এদিকে অনশনের কারণে সকাল থেকে পল্টন থেকে প্রেসক্লাবের দিকের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতির কারণে সড়ক বন্ধ থাকায় আশপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির তৈরি না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সক্রিয় ছিলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচনের মাধ্যমে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই আন্দোলন আমাদের শুরু করতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার আজকে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। তাদের যদি আমরা পরাজিত করতে না পারি, তাদের যদি ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে না পারি; তাহলে এ দেশের মানুষের অস্তিত্ব থাকবে না। আপনারা (দলের নেতা–কর্মীরা) আজ অনশন পালন করে এ সরকারকে জানিয়ে দেন, এ সরকারের ওপর এ দেশের মানুষের আর কোনো আস্থা নেই। তাদের সরে যেতে হবে।’ ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় অনশনে অংশ নিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, সহ–দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম, সহ–প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, সহ বিএনপির অসংখ্য নেতা কর্মীরা। এছাড়াও নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জোট নেতাদের মধ্যে জামায়াতের নূরুল ইসলাম বুলবুলসহ বেশ কয়েকটি শরিক দলের নেতারা সংহতি জানিয়ে অনশনে বক্তব্য রাখেন।