শনিবার, নভেম্বর ২৩

এবার সত্যিই না ফেরার দেশে চলে গেলেন হিথ স্ট্রিক

0

স্পোর্টস ডেস্ক: আগেও একবার তার মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। যদিও পরে হিথ স্ট্রিক নিজে জানিয়েছেন, ‘আমি মৃত্যুবরণ করিনি। তবে এবার সত্যিই চলে গেলেন তিনি। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক বোলিং কোচ। লিভার ক্যানসারের কাছে হেরে ৪৯ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন জিম্বাবুয়ের সাবেক এই পেসার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে তার স্ত্রী নাদিনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ফেসবুক পোস্টে তার স্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে ৩ সেপ্টেম্বর (আজ) ভোরে আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ভালোবাসা এবং আমার সুন্দর সন্তানদের বাবাকে ফেরেশতাদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেখানে তিনি নিজ পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে শেষ দিনগুলো কাটাতে চেয়েছিলেন। তিনি প্রেম এবং শান্তিতে আচ্ছাদিত ছিলেন এবং একা পার্কে হাঁটেননি। আমাদের আত্মা অনন্তকালের জন্য আবদ্ধ, স্ট্রিকি। যতক্ষণ না আমি আবারও তোমাকে আঁকড়ে ধরি। অনেক দিন ধরেই ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন ৪৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। তবে চলতি বছরের শুরুতেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। শেষ পর্যন্ত মরণব্যাধি ক্যানসারের কাছে হারই মানলেন তিনি। ২০০০-২০০৪ সাল পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ছিলেন স্ট্রিক। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৬৫টি টেস্টের সঙ্গে ১৮৯টি ওয়ানডে খেলেছেন দেশটির ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। তিনি জিম্বাবুয়ের হয়ে টেস্টে ১০০ উইকেট নেওয়া একমাত্র বোলার। জিম্বাবুয়ের জার্সিতে সর্বোচ্চ উইকেট দখলের কীর্তিও তারই। ৪৫৩ উইকেট নিয়ে সবার ওপরেই আছেন তিনি। একা হাতেই দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে এক যুগের বেশি সময় কাজ করেছেন। ব্যাট হাতেও দারুণ অবদান রেখেছেন স্ট্রিক। টেস্টে এক হাজার ৯৯০ ও ওয়ানডেতে ২ হাজার ৯৪৩ রান করেছেন তিনি। সাদা পোশাকে হারারেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম তিনিই সেঞ্চুরি করেছিলেন। কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের হয়ে খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর ২০০৫ সালে কাউন্টিতে ওয়ার্কশায়ারের অধিনায়ক হিসেবে দুই বছরের চুক্তি করেন তিনি। ছিলেন ক্লাবটির অধিনায়কের দায়িত্বে। তবে ২০০৭ মৌসুমে এক খেলায় অধিনায়কত্ব করার পর ওই বছরের ২৫ এপ্রিল ওয়ার্কশায়ারের অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর ২০০৭ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইএসএলে) নাম লেখানোর পরই কার্যত ইতি ঘটে তার ক্যারিয়ারের। কোচিং ক্যারিয়ারে জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ড, গুজরাট টাইটানস, কলকাতা নাইট রাইডার্সের মতো দলগুলোর সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। ২০১৪ সালের মে মাসে বাংলাদেশ জাতীয় দলের বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি। মোস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে আসার অন্যতম কারিগরও তিনি। এ ছাড়া দুই দফায় (২০০৯-১৩ এবং ২০১৬-১৮) জিম্বাবুয়ের কোচ ছিলেন তিনি। তবে কিংবদন্তি এই অলরাউন্ডারের শেষটা সুখকর ছিল না। ২০২১ সালে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে তাকে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি। শেষ পর্যন্ত অভিযোগের ভার মাথায় নিয়েই চলে গেলেন জিম্বাবুয়াইয়ান এই কিংবদন্তি।

Share.