ডেস্ক রিপোর্ট: অর্থনৈতিক চাপে আছেন তুরস্কের ইস্তাম্বুলের মেয়র একরাম ইমামোগলু। বড় বড় প্রকল্পের কাজ করতে তাঁর প্রয়োজন অর্থের। তবে সরকারি পক্ষের লোক না হওয়ায় ঋণ পেতে পদে পদে বাধার মুখে পড়ছেন, এমন অভিযোগ করেছেন তিনি। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। সেক্যুলার রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) মেয়র একরাম ইমামোগলুর নেতৃত্বে গড়ে তোলা নতুন প্রশাসনের দাবি, তুরস্কের রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো বড় বিনিয়োগ প্রকল্পে অর্থায়ন ছাড় করছে না। সরকারের চাপেই ব্যাংগুলো ঋণ দিচ্ছে না, এমন অভিযোগ তাঁর। ইস্তাম্বুলের উপকণ্ঠে হতে যাওয়া মেট্রো লাইনের কাজ অর্ধেক হয়ে বন্ধ হয়ে আছে। অসংখ্য শ্রমিক কাজ করেন এই প্রকল্পে। বেকার হয়ে বসে আছেন তাঁরা। ২০১৬ সালে ৫৫ কোটি ইউরো ব্যয়ে এই মেট্রোলাইন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। মূলত এশিয়ার সঙ্গে শহরের সংযোগ স্থাপনের জন্য এই মেট্রো লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের অর্থায়ন সমস্যা শুরু হয় ২০১৮ সালে। তুরস্কের মুদ্রা লিরার ব্যাপক অবমূল্যায়ন ও মন্দা ঋণদাতাদের নাজুক অবস্থায় ফেলে। তবে চলতি বছরে এসে ঋণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অশান্তিই মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জিতে মেয়র হন একরাম ইমামোগলু। তিনি দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ রিপাবলিকান পিপলস পার্টির নেতা। আর এর মধ্য দিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ইসলামপন্থী একেপি পার্টি ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই শহরের ক্ষমতা হারায়। আর এ কারণেই তাঁর রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে, নতুন মেয়রের এমনটাই দাবি। গত মাসে এক সাক্ষাৎকারে ইমামোগলু বলেন, ‘আমরা দেখছি যে আমাদের প্রতিদিনের প্রয়োজন মেটানোর ঋণও ছাড় করা হচ্ছে না। আসলে ২৫ বছরের ক্ষমতা হারানোর মানসিক প্রভাব এটি। তবে আমার এখনো বিশ্বাস আছে সরকারের এই অবস্থান এবং ব্যবহার পাল্টাবে। পৌর প্রশাসনের জন্য যে বরাদ্দ, সেই ঋণ না দিয়ে সরকার আমাদের হাত বেঁধে রাখতে চাইছে।’ ইমামোগলু বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মনোভাবের কোনো পরিবর্তন এলে আমি জনগণকে তা আনন্দের সঙ্গে জানাব।’ এখন ঋণের জন্য ইউরোপের ও পশ্চিমা দেশগুলোতে ধরনা দিতে হচ্ছে নতুন মেয়রকে। গত মাসে তিনি জার্মানির ডয়চে ব্যাংক থেকে ১১ কোটি ইউরো এবং ফরাসি এক ব্যাংক থেকে মেট্রো লাইনের কাজ আবার চালু করার জন্য ৮ কোটি ৬০ লাখ ইউরোর ঋণ সহায়তা নেন। তবে তহবিল সংগ্রহের জন্য লন্ডন, প্যারিস, বার্লিনসহ পশ্চিমা রাজধানীগুলোতে তাঁর সফর সরকার সমর্থিত মিডিয়া দ্বারা ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। অবশ্য মেয়রের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছে নিরুপায় তাঁরা। পৌর কর্তৃপক্ষের এক মুখপাত্র বলেন, ‘সরকারি ব্যাংকগুলো আমাদের ফোনও তোলে না। আমরা একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। ইস্তাম্বুল পৌর প্রশাসনের ঋণের জন্য রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর সঙ্গেই ব্যবসা করতে হবে আমাদের।’ দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই ইমামোগলু প্রশাসনের ওপর প্রায় ২৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন লিরার আগের ঋণ চেপেছে। মেট্রো লাইনের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে তাঁকে আরও ১৯ বিলিয়ন লিরা ঋণ নিতে হবে।
এরদোয়ানের রোষের মুখে ইস্তাম্বুলের মেয়র
0
Share.