কম্পিউটার অপারেটর থেকে ৪৬০ কোটি টাকার মালিক!

0

ঢাকা অফিস: ২০০১ সালে টেকনাফ স্থলবন্দরে চুক্তিভিত্তিক দৈনিক ১৩০ টাকা বেতনে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি নেন নুরুল ইসলাম (৪১)। তিনি এখন ৪৬০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছেন বলে দাবি করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ দাবি করেন।র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, ২০০৯ সালে নুরুল ইসলাম চাকরি ছেড়ে দিয়ে আস্থাভাজন একজনকে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগ দেন। তার আগেই চাকরির সুবাদে বন্দরের সংশ্লিষ্ট মানুষের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে তার। এক পর্যায়ে গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট। দালালি, পণ্য খালাস, পণ্যের আড়ালে অবৈধ মালামাল এনে অল্প সময়েই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি।খন্দকার আল মঈন বলেন, অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থের মাধ্যমে এরই মধ্যে তিনি ঢাকায় ছয়টি বাড়ি ও ১৩টি প্লটের মালিক। এ ছাড়া সাভার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে সর্বমোট ৩৭টি প্লট-বাগানবাড়ি-বাড়ি রয়েছে তার। অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা।এদিকে গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নুরুলকে আটক করে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে তিন লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ জাল টাকা, তিন লাখ ৮০ হাজার মিয়ানমার মুদ্রা, চার হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা ও নগদ দুই লাখ এক হাজার ১৬০ টাকা উদ্ধার করা হয়।র‍্যাব কমান্ডার বলেন, নুরুল ইসলামের সিন্ডিকেটে ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছে। এ সিন্ডিকেটটি পণ্য খালাস, পরিবহণ সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অবৈধ মালামাল খালাসে সক্রিয় ছিল। এ ছাড়া কাঠ, শুঁটকি মাছ, বরই আচার, মাছের আড়ালে ইয়াবাসহ অবৈধ পণ্য নিয়ে আসত। চক্রটি টেকনাফ বন্দর, ট্রাকস্ট্যান্ড, বন্দর লেবার ও জাহাজের আগমন-বর্হিগমন নিয়ন্ত্রণ করত।অবৈধ আয়ের উৎসকে ধামাচাপা দিতে নুরুল ইসলাম বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। এরমধ্যে এম এস আল নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, এম এস মিফতাউল এন্টারপ্রাইজ, এম এস আলকা এন্টারপ্রাইজ, আলকা রিয়েল স্টেট লিমিটেড এবং এম এস কানিজ এন্টারপ্রাইজ অন্যতম।র‍্যাব জানায়, নুরুলের নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ১৯টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বর্তমানে তিনি জাহাজ শিল্প ও ঢাকার কাছাকাছি বিনোদন পার্কেও বিনিয়োগ করছেন। তার সঙ্গে এক-দুজন ব্যক্তি নয়, অনেকেই তার কাজে সহযোগিতা করেছেন। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কারও নাম বলেননি, পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে নাম জানা যাবে।কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকলেও ২০০১ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত বন্দরকেন্দ্রিক অনেকেই সঙ্গেই যোগাযোগ ছিল। নুরুল ইসলাম সাভারে একটি পার্ক ও বন্দরে জাহাজ কেনার পরিকল্পনাও করেছিলেন বলে জানায় র‍্যাব।

Share.