করোনামুক্ত আছেন খালেদা জিয়া: মির্জা ফখরুল

0

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসমুক্ত বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘করোনামুক্ত থাকলেও ওনার আগের যে অসুস্থতা সেটার উন্নতি হয়নি।’আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুরে উত্তরার নিজ বাসা থেকে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।করোনাকালে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সুস্থ রাখার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি কেমন আছেন, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, তাকে সুস্থ রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন, করোনা ভাইরাসের কোনো চিকিৎসা নেই। সে জন্য এ ভাইরাস প্রতিরোধ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উনি করোনা থেকে মুক্ত আছেন। তবে ওনার যে পুরনো অসুস্থতা, সেটার তেমন উন্নতি হয়নি। চিকিৎসার তেমন সুযোগ নেই। হাসপাতালগুলোতেও যাওয়া যাচ্ছে না। বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে তো সরকারের শর্তই আছে যে, বিদেশে যাওয়া যাবে না। অর্থাৎ তার যে পুরোনো অসুখ তার চিকিৎসা হচ্ছে না।‘করোনা নিয়ে বিএনপি ও বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত হয়েছে’, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের যে ব্যর্থতা সেটা ঢাকতে গোটা জাতির সঙ্গে তারা মিথ্যাচার করছেন। আমাদের কথা নয়, চীনের যে বিশেষজ্ঞ দল এসেছিল তারা বলে গেছে যে, তাদের (সরকারের) কোনো প্রতিরোধ পরিকল্পনাই ছিল না। আজ প্রমাণিত হয়ে গেছে, তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এটা বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করলেই বুঝতে পারবেন। কত মানুষ টেস্ট করতে পারছেন না, কত মানুষ টেস্ট করতে গিয়ে মারা গেছেন, কত মানুষ অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন, কত মানুষ সাধারণ চিকিৎসার জন্যও কোনো হাসপাতালে যেতে পারছেন না; স্বাস্থ্যব্যবস্থা যে পুরোপুরিভাবে ভেঙে পড়েছে এটাই তার প্রমাণ।সম্প্রতি ত্রাণ বিতরণে বিএনপিকে কোথায় বাধা দেওয়া হয়েছে তার প্রমাণ চেয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, সাতক্ষীরায় সংসদ সদস্যের ছেলের নেতৃত্বে হামলা করা হয়েছে। ১৫/২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। অনেককে আহত করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের মহিলা কাউন্সিলর আয়শা আক্তারের ওপর হামলা হয়েছে। রাজশাহীতে ত্রাণ দেওয়ার সময় ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কুষ্টিয়ায় জাহিদুল ইসলাম বিপ্লবকে আটক করা হয়েছে। আমি বলতে চাই সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য সব রকমের কূটকৌশল প্রয়োগ করেছে।উল্লেখ্য, দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে গত দুই বছর ধরে কারাগারে বন্দি ছিলেন খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য গত বছর ১ এপ্রিল থেকে তাকে রাখা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।আদালতে জামিন না হওয়ায় খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, মানবিক কারণে নির্বাহী আদেশে যেন তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।তাতে সাড়া দিয়ে সরকারের তরফ থেকে গত ২৪ মার্চ জানানো হয়, বিএনপি চেয়ারপারসনের দণ্ডের কার্যকরিতা স্থগিত করে ছয় মাসের জন্য তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।এরপর ২৫ মার্চ বিকালে কারা কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজায় নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। মুক্তির পর বাসাতেই অবস্থান করছেন তিনি।

Share.