ডেস্ক রিপোর্ট: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে ইউরোপে। নাইট পার্টি, আমোদের জন্য মানুষের সমাবেশ ও পারিবারিক অনুষ্ঠানের কারণেই ইউরোপে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এমন জমায়েত এড়িয়ে চলতে প্রশাসনের আবেদনে মানুষজন যথেষ্ট সাড়া দিচ্ছে না। তাই নাইট কারফিউ ও অন্যান্য কড়াকড়ি পথ বেছে নিচ্ছে ইউরোপের একাধিক দেশ।জার্মানিতে প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণের হার। বৃহস্পতিবার দেশটি ১১ হাজারের বেশি মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান। আগামী সপ্তাহে চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। করোনা মহামারি মারাত্মক রূপ নেয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে কার্যত গোটা দেশজুড়ে নাইট কারফিউ কার্যকর করছে ফ্রান্স। একদিনে প্রায় ৪১ হাজার নতুন সংক্রমণের ঘটনার ফলে দেশটির সরকার ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছে। আগের দিনের তুলনায় সংক্রমণের হার প্রায় ১৫ হাজার বেড়েছে দেশটিতে। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ কাস্টেক্স বলেছেন, দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় নাইট কারফিউ চালু করা হচ্ছে। ইতালির রোম, নেপলস ও মিলান শহরেও রাতে ফের কারফিউ জারি করা হয়েছে। ইতালিও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মুখে পড়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে। তবে আপাতত মার্চ মাসের মতো দেশজুড়ে লকডাউনের পথে যাচ্ছে না ইতালি। প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তে অর্থনীতির আরেও ক্ষতি এড়াতে স্থানীয় পর্যায়ে কড়াকড়ির পক্ষে যুক্তি দেখাচ্ছেন। গ্রিসের রাজধানী এথেন্স ও আরেও কিছু শহরে রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক দেশের মতো গ্রিসেও রাতে মানুষের সমাবেশ, পার্টি ও আমোদের কারণে সংক্রমণ আরও দ্রুত ছড়াচ্ছে। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিসোটাকিস টেলিভিশন ভাষণে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে আমোদ কমিয়ে দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার ডাক দিয়েছেন। চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই বাবিস বারবার লকডাউনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেও বৃহস্পতিবার ঠিক সেই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন। এজন্য দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন পদক্ষেপ না নিলে নভেম্বর মাসের শুরুতেই দেশের স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো ভেঙে পড়বে। সংক্রমণের হার আগের রেকর্ড ভেঙে এগিয়ে চলায় সে দেশে আতঙ্ক বাড়ছে। পর্তুগাল, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, স্পেন ইত্যাদি দেশেও নানা পর্যায়ে কড়াকড়ি চালু আছে এবং প্রয়োজনে আরও কড়া পদক্ষেপ নেয়ার ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে।
করোনার তাণ্ডব চলছে ইউরোপে
0
Share.