ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারীতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও প্রাণহানি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জীবনযাপন। লকডাউনের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে কাজকর্ম, ব্যবসাবাণিজ্য। এতে দেশটিতে এখন বেকার হয়ে পড়েছেন প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষ। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহেই বেকার সুবিধার আবেদন পড়েছে ৩২ লাখ। আবেদনকারীদের বেশির ভাগই নারী। খবর বিবিসির। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্চের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত দেশে বেকার ছিলেন ৬৯ লাখ মানুষ। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পরই অর্থাৎ গত ছয় সপ্তাহে বেকার হয়েছেন ৩ কোটিরও বেশি। সব মিলিয়ে এখন বেকার সুবিধা পাওয়ার আবেদন দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৩৩ লাখে।মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেকার হওয়া এই অংশটি দেশের মোট শ্রমশক্তির ২০ শতাংশ। প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে এ সংখ্যা। দেশের কিছু অংশে লকডাউন শিথিল করার পরও এতো বেকার ভাতার আবেদনের মানে হচ্ছে, তারা চাকরি হারিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটাল ইকনোমিকমের প্রধান অর্থনীতিবিদ পল অ্যাসওয়ার্থ বলেন, দেশটির কিছু অংশ চালু হতে শুরু করলেও সুবিধা ভোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। এর মানে খুব কম সংখ্যক মানুষই কাজে ফিরছে। এতে হতাশাও বাড়বে। ভ্রমণ বন্ধ থাকায় উবার, লিফট ও এয়ারবিএনবির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই কর্মী ছাটাই করছে। মেডিকেল, রেস্তোরাঁ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে।অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এপ্রিলের তুলনায় বেকারত্ব ১৫ শতাংশ বা এর চেয়ে বেশি বাড়তে পারে। দুই মাস আগে বেকারত্বের হার ছিলো ৩.৫ শতাংশ; যা গত ৫০ বছরের মধ্যে সর্ব নিম্ন।২০০৮ সালে বৈশ্বিক মন্দার সময় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতেও সংকট তৈরি হয়েছিলো। এখন করোনা আঘাত হানার পর তার চেয়েও চেয়ে বাজে অবস্থা বিরাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে।এদিকে দ্য ন্যাশনাল মাল্টিফ্যামিলি হাউজিং কাউন্সিল জানিয়েছে, বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়া পরিসেবা বিল পরিশোধে বিলম্ব করছে। এক-তৃতীয়াংশ মানুষও গত মাসে পুরো বিল পরিশোধ করেনি।প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমাজ বিজ্ঞানী ম্যাথিউ ডেসমন্ড বলেন, এভাবে চলতে থাকলে স্বাস্থ্য সমস্যা গৃহহীন সমস্যায় পরিণত হবে। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ব্যবসা বাণিজ্য শুরু হলে ধীরে ধীরে অর্থ সংকট কেটে যাবে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৩ লাখ মানুষ আর প্রাণ হারিয়েছেন ৭৬ হাজার ৫১৩ জন।