করোনা চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের অনুমতি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

0

ডেস্ক রিপোর্ট: করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধের ট্রায়াল ফের চালু করার অনুমতি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গত ২৫মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা করেছিল, ওষুধটি সেবন করলে সাধারণ মানুষের শারীরিক অসুবিধা হতে পারে– এই বিষয়টি বিবেচনা করে আপাতত বন্ধ করা হোক অ্যান্টি ম্যালেরিয়া ড্রাগটির ব্যবহার। সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ট্রায়াল থামানোর বা পরিবর্তন করার কোনও কারণ মেলেনি। `কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার নিয়ে ল্যানসেট জার্নালে গত মাসে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে বলা হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের এই ওষুধ দিলে তাদের মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে। এ কথা প্রকাশিত হওয়ার পরেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। `সেসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ট্রেডস আধানম জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার জন্য যে সলিডারিটি ট্রায়াল গ্রুপ তৈরি হয়েছে, অর্থাৎ যারা স্বেচ্ছায় বিভিন্ন ওষুধের ট্রায়ালে রাজি হয়েছেন, তাদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়া সাময়িক ভাবে বন্ধ করা হয়েছে। কারণ এ সংক্রান্ত এক্সিকিউটিভ গ্রুপ সমস্ত সেফটি ডেটা বিবেচনা করে দেখছে। যাদের এই ওষুধ দেওয়া হয়েছে, তাদের শরীরে ড্রাগের কী ধরনের প্রভাব পড়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাকি ওষুধগুলোর ট্রায়াল চলছে। কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার নিয়ে হইচই বাধিয়ে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি সম্প্রতি ট্রাম্প এও বলেন যে, তিনি নিজে এই ওষুধ খাচ্ছেন। শুধু ট্রাম্প নন, ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও গত সপ্তাহে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের পক্ষে মত দেন। আধানম জানিয়েছেন, ‘নানা তথ্য বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ট্রায়ালে কোনো বদল ঘটানোর দরকার নেই। কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় যেমন সলিডারিটি ট্রায়াল চলছিল হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের তেমনই চলুক। কিন্তু ডেটা সেফটি ও মনিটরিং কমিটি ট্রায়ালের উপর কড়া নজর রাখবে।’ যদিও মার্কিন ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফডিএ আগেই সতর্ক করেছিল, কোনো কারণ ছাড়া নিয়মিত এই ওষুধ খেলে কারও কারও হৃদস্পন্দনে গুরুতর অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে কোনো রোগী যখন অ্যাজিথ্রোমাইসিনের মত অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে ম্যালেরিয়ার ওই ওষুধ খান, কিংবা যাদের আগে থেকেই হৃদযন্ত্র বা কিডনির জটিলতা আছে, তাদের ক্ষেত্রে হৃদস্পন্দনে অস্বাভাবিকতা তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাও ক্লোরোকুইন ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি নিয়ে মানুষকে সতর্ক করে বিবৃতি দিয়েছিল। কিন্তু এর কোনোটাই এখনও গবেষণালব্ধ ও প্রমাণিত তথ্য নয়। তাই শেষ কথা বলবে ট্রায়ালই। তা যতক্ষণ না পুরোপুরি সফল বা পুরোপুরি ব্যর্থ বলে ঘোষিত হচ্ছে ততক্ষণ কোনও সিদ্ধান্তে আসা মুশকিল। ৩৫টি দেশ থেকে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি রোগী এই অ্যান্টি ম্যালেরিয়া ড্রাগটির ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন।

Share.