লাইফস্টাইল ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস বিস্তার করার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুতই বাড়ছে করোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন ভুয়া তথ্য ও খবর। এর মধ্যে কিছু তথ্য আছে যা একদমই ভুল বা মিথ্যা। আবার কিছু ভুল তথ্য আছে যা কিছু সত্য ধারণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এসব ভুয়া তথ্য শনাক্ত করা ও মোকাবিলা করা খুবই কঠিন। যেমনটা অনেকে বলছেন ভিটামিন-ডি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ করে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এ তথ্য কতটা সত্য।
ভিটামিন-ডি কী জন্য?
এ পর্যন্ত করোনার চিকিৎসায় বিভিন্ন উপায় বাতলানো হয়েছে। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, আইভারমেকটিন, ভিটামিন-ডি ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা হয়েছে, এখনো হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রক্রিয়ায় এটা স্বাভাবিক যে, প্রথমে ধারনা করা হয় অমুক রোগে অমুক ওষুধ কার্যকর। কিন্তু গবেষণার পর দেখা যায় তা নয়।এদিকে অনলাইনে অনেক সময় প্রাথমিক গবেষণা বা অনেক নিম্ন-মানের গবেষণার ফলও অনেক সময় প্রেক্ষাপট-বিবর্জিতভাবে তুলে ধরা হয়। এতে করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় এবং এসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারের কাজে ব্যবহার হয়।তবে ভিটামিন-ডি কে করোনা প্রতিরোধে কার্যকর হিসেবে মনে করার পেছনে কিছু কারণও রয়েছে। কেননা, মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় ভিটামিন-ডি উপকারী ভূমিকা পালন করে।যুক্তরাজ্যে ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করতে পরামর্শ দেয়া হয়। যাদের ভিটামিনের ঘাটতি রয়ছে তাদের সারা বছরই এটা খাওয়ার জন্য বলা হয়। তবে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন-ডি খাওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধ বা চিকিৎসা সম্ভব- তা এখনো কোনো গবেষণায় যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতীয়মান হয়নি। তার অর্থ আবার এটা নয় যে, আগামী বা ভবিষ্যতে কোনো গবেষণায় এর পরিবর্তন আসবে না।
গবেষণা কী বলছে?
বেশ কিছু জরিপ বলছে ভিটামিন-ডি এবং করোনা সংক্রমণের পরিণামের মধ্যের সম্পর্ক রয়েছে। এগুলো পর্যবেক্ষণ থেকে পাওয়া প্রমাণ। যার অর্থ- করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর ভিটামিন-ডি ঘাটতি রয়েছে এমন মানুষদের ক্ষেত্রে কি হয়েছে এবং সঙ্গে উচ্চতর ভিটামিন-ডি আছে এমন মানুষদের কি হয়েছে তারই তুলনা করা হয়েছে।রোগীদের ওপর অন্য যেসব প্রভাবক কাজ করেছে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি। এগুলো তাই সর্বোচ্চ স্তরের বা ‘গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড’ তথ্যপ্রমাণ নয়। সেটা পেতে হলে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত ট্রায়াল চালাতে হয় – যাতে কিছু লোককে একটি চিকিৎসা পদ্ধতি দেয়া হয়, অন্য আরো কিছু লোককে দেয়া হয় একটি ‘ডামি’। যাতে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন যে চিকিৎসার যে ফল পাওয়া যাচ্ছে – তা ওই বিশেষ পদ্ধতি প্রয়োগের কারণেই হচ্ছে। তবে এটা ঠিক যে পর্যবেক্ষণভিত্তিক জরিপে দেখা যায়, কিছু গোষ্ঠীর মানুষদের ভিটামিন ডি ঘাটতি থাকার এবং করোনা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি। যেমন – যারা বয়স্ক মানুষ, যারা মোটা হয়ে গেছেন, বা কৃষ্ণাঙ্গ বা দক্ষিণ এশিয়ান জনগোষ্ঠীর মানুষ যাদের ত্বকের রঙ অপেক্ষাকৃত কালো বা বাদামী।