ডেস্ক রিপোর্ট: ২০০৩ সালে যখন সার্স ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লো তখন চীনের গণপরিবহন জীবাণুমুক্ত করতে প্রচুর স্প্রে করা হতো। এর উদ্দেশ্য ছিলো দুটি- প্রথম ভাইরাসের সাথে লড়াই আর দ্বিতীয়ত মানুষকে দেখানো রহস্যময় নতুন ভাইরাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। গণপরিবহনে অনেক সময় যাত্রীরা না বুঝেই পরিচ্ছন্ন আসনে বসে পড়তো এবং পরে দেখা যেতো তার ট্রাউজার ধবধবে সাদা। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন কারণ কর্তৃপক্ষ এক কোটিরও বেশি মানুষের শহরে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে এবং লোকজনকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। শহরের আটকেপড়া অধিবাসীরা এখন মহামারীর সাথে খাপ খাওয়াতে সৃষ্টিশীল চিন্তাভাবনা শুরু করেছ।
নিজের সুরক্ষা : মুখের মাস্ক চীনে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। জনসমাগম বেশি এমন জায়গায় জীবাণু সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে, মেকআপ টিক রাখতে কিংবা দূষন থেকে মুক্ত থাকতে এটি বহুল ব্যবহৃত। তাই এবারের মহামারীর চীন ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে এটি বাজারে পাওয়া যাবেনা সেটি অবাক করার মতো কোনো বিষয় নয়। এগুলো এখন বিক্রি হতে পারে হট কেকের মতো যদিও ভাইরাস প্রতিরোধে এগুলো কতটা কার্যকর সে সম্পর্কে প্রশ্ন থেকেই যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে শুধু মাস্ক যথেষ্ট নয়- উদাহরণস্বরূপ হাত ধোয়াটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেশীদেরও ওপর দেয়া হচ্ছে নানা বিধি নিষেধ। একটি পরিবার থেকে একজন পাঠানোর অনুমতি আছে বিশেষ প্রয়োজনে। যারা যাচ্ছে তাদের তথ্যও সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ডেলিভারি সার্ভিস গুলোও নতুন পন্থা বের করেছে। তারা লকার ব্যবহারে উৎসাহিত করতে সরাসরি সাক্ষাত এড়ানোর জন্য। ভবনের ভেতরে লিফটগুলো টিসু বা টুথপিক রাখা হচ্ছে এবং এগুলোর জন্য অন্যদের সাথে যোগাযোগ কম করার অনুরোধ করা হচ্ছে।
প্রভাব পড়ছে বিয়ে শাদীতেও : চীনা জুটিগুলোর বিয়ের জন্য ০২-০২-২০২০ ছিলে বিশেষ দিন। তবে বেইজিং ছাড়া অন্যত্র কর্তৃপক্ষ বড় জমায়েত এড়াতে বিয়ে রেজিস্ট্রি বন্ধ ঘোষণা করেছে। তবে সেদিন সিচুয়ান প্রদেশে ৫দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে যেটি উহানের এক হাজার কিলোমিটার পশ্চিমে। মানুষজন তখন দ্বিধান্বিত ছিলো যে ঘরেই থাকবো ও ভবন ধ্বসে মরবে কিনা নাকি বাইরে গিয়ে করোনাভাইরাসের মুখে পড়বে।
তবে শো মাস্ট গো অন- এই চেতনায় আটকে পড়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা তাদের সম্পর্ককে নিয়ে গেছে অনলাইনে। চীনের রাষ্ট্রীয় পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস বলছে পহেলা ফেব্রুয়ারির পর এক কোটি বিশ লাখ শিক্ষার্থী অনলাইনে শিক্ষাগ্রহণ করেছে। তবে বিজ্ঞানীরা তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলছে সার্সের চেয়ে করোনা ভাইরাসে মৃত্যু আশংকা কম। কিন্তু যখন গবেষকরা চেষ্টা করছেন নতুন ভ্যাকসিনের জন্য তখন আটকে পড়া মানুষ নিজের মতো করেই সংকট মোকাবেলায় বের করছে সমাধান।