করোনা ভাইরাসের ভয়ে কাঁপছে চীন

0

ডেস্ক রিপোর্ট: রহস্যময় করোনা ভাইরাসের ভয়ে কাঁপছে চিন। ১৮ জনের মৃত্যুর পরে দেশের পাঁচ শহরকে কার্যত ‘বন্দি’ করল চীন সরকার। সৌদি আরবে কর্মরত এক ভারতীয় নার্সের দেহেও করোনা ভাইরাস মিলেছে। ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরন খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, আক্রান্ত নার্স জেড্ডার আসির ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের যেন দ্রুত চিকিৎসা হয় তা নিশ্চিত করার জন্য বিদেশমন্ত্রীকে এস জয়শঙ্করকে চিঠি লিখেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। সতর্কতা হিসেবে বেজিংয়ের নির্দেশ, ওই পাঁচ শহরে কোনও বিমান ওঠানামা করবে না। ট্রেন ছাড়বে না। বাসিন্দাদের বলা হয়েছে, খুব প্রয়োজন ছাড়া শহরের বাইরে না বেরোতে। বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ, উহান শহরের সি-ফুড ও মাছ-মাংসের বাজার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। এই বাজারে বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণীর মাংস বেআইনি ভাবে বিক্রি হত। দেশজুড়ে সাড়ে ছ’শোরও বেশি লোক এখন আক্রান্ত। দেখা গিয়েছে, বিদেশে আক্রান্তদের বেশির ভাগ চীন-ফেরত। সর্বশেষ খবরটি এসেছে সিঙ্গাপুর থেকে। এর পরেই ভাইরাসের ‘উৎস’ উহান, হুয়াংগ্যাং ও ইঝৌ শহরকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়েছে। হুবেই প্রদেশের বন্দর-শহর উহানে ১ কোটি ১০ লক্ষ মানুষের বাস। অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রেন চলাচল, বিমান পরিবহণ বন্ধ করে দেওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহরবন্দি লোকেদের মধ্যে। গত কাল উহানে এ নিয়ে সরকারি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরে একই নির্দেশ আসে হুয়াংগ্যাংয়ের বাসিন্দাদের কাছেও। ৭৫ লক্ষ মানুষের বাস এই শহরে। গত কাল মধ্যরাতে ট্রেন-সহ সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ সিনেমা হল, সাইবার কাফে, বাজার-দোকানও। ইঝৌ শহরও একই পথে হেঁটেছে। রাতের দিকে আরও দু’টি শহরকে ‘বন্দি’ ঘোষণা করা হয়। ট্রেন-বিমানের পাশাপাশি ফেরি, বাস চলাচলও বন্ধ। এই সব শহরের স্টেশনগুলিতে নামানো হয়েছে সেনা-পুলিশ। স্টেশনের প্রবেশ পথে গার্ডরেল বসানো হয়েছে। চীনা সোশ্যাল মিডিয়া ‘উইবো’তে ‘শহরবন্দি’দের এক জন লিখেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে যেন পৃথিবীর শেষ দিন।’’ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অনেকে। শনিবার, ২৫ জানুয়ারি চিনা নববর্ষ। প্রবাসীরা দেশে ফিরে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, উৎসবে মেতে ওঠেন। উহানের স্টেশন, বিমানবন্দর উপচে পড়ে ভিড়ে। সেই ছবিটাই এ বার নেই। শ্বাস-প্রশ্বাসে ছড়ায় ভাইরাসটি। গত ৩১ ডিসেম্বর প্রথম ধরা পড়ে। তার পর থেকে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত ৫৭০ জন। জাপান, হংকং, ম্যাকাউ, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, তাইল্যান্ড, আমেরিকা, সৌদি আরব, ভিয়েতনাম ও সিঙ্গাপুর থেকে খবর মিলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, তারা এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি যে ‘বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সঙ্কট’ ঘোষণা করা হবে কি না। সংস্থার প্রধান বলেন, ‘‘চিন যে কঠিন পদক্ষেপ করেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’’

Share.