ঢাকা অফিস: নতুনভাবে কর আরোপিত না করে কর ফাঁকি ও অর্থ পাচার বন্ধ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে সম্প্রসারণমূলক বাজেট করার সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সোমবার (৩১ মে) ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষে দেশের অর্থনীতির স্বাধীন পর্যালোচনা করার সময় এমন সুপারিশ করেছে সিপিডি।সিপিডি বলেছে, নীতি পরিকল্পনায় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির চিন্তা থেকে বেরিয়ে বৈষম্য রোধ ও সুষম বণ্টনেরে দিকে মনোযোগ দিতে হবে।অনুষ্ঠানে সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বক্তব্য প্রধান করেন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।প্রবন্ধে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন চিত্র হতাশাজনক মনে হচ্ছে। ১০ মাসে হয়েছে ৪২ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কম। ১০ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৪৯ শতাংশ। আর স্বাস্থ্য খাতের এডিপি বাস্তবায়ন মাত্র ৩১ শতাংশ। এছাড়া ব্যক্তি খাতে ঋণ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল যেখানে ১৫ শতাংশ, প্রথম ৮ মাসে তা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ।সম্প্রসারণমূলক বা বড় বাজেট করার পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে প্রবন্ধে বলা হয়েছে, জিডিপির তুলনায় ঋণ এখনো ৩২ থেকে ৩৩ শতাংশের ঘরে রয়েছে। এখনো ঋণ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। কৃষি খাতে মূল্য কমিশন ও ব্যাংক কমিশন করার সুপারিশও করেছে সিপিডি।প্রবন্ধে আরও বলা হয়েছেও, মূল্য কমিশন থাকলে কৃষকেরা সরাসরি পণ্য বিক্রি করতে পারবেন, ন্যায্যমূল্যও পাবেন। এ কমিশন থাকলে কোন সময়ে কী নিত্যপণ্য আমদানি করতে হবে, তার পরামর্শ পাওয়া যেত।সিপিডির বহুদিনের সুপারিশ ব্যাংক কমিশন করা। সরকার একবার উদ্যোগ নিয়েও আবার পিছিয়ে গেছে। এটা দরকার। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে খেলাপি ঋণের যা দেখা যাচ্ছে, তা যে কোনো স্বচ্ছ ছবি নয়, এমনটা বলা যায়। প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে বলেও সিপিডির কাছে ধরা পড়েছে।অনুষ্ঠানে সিপিডি প্রণোদনা বাস্তবায়নে বহু পাক্ষিক টাস্কফোর্স গঠনের পরামর্শ দিয়েছে। তারা বলেছে, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, কৃষি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আগামী বাজেটটি করতে হবে।সিপিডি আরও বলেছে, এ সময়ে নতুন কর আরোপ করা কঠিন। কিন্তু বাজেট তো করতে হবে। অর্থের দরকার। ফলে এখন দরকার হচ্ছে কর ফাঁকি বন্ধ করা এবং অর্থ পাচার বন্ধের দিকে নজর দেওয়া।সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বাজেট বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন। এছাড়া নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, সরকার বলছে, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে জিডিপির ৩ শতাংশ বরাদ্দ। বাস্তবে এটা দেড় শতাংশ হবে।গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, যেকোনো সংস্কারের বিষয় এলেই সরকারের মধ্যে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ সিপিডির
0
Share.