ঢাকা অফিস: কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার খবরের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এটির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে একটি মহল সব সময় গুজব রটানোয় লিপ্ত আছে। তারা সবসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে গুজব রটিয়ে দেশের সম্প্রীতি শান্তি বিনষ্টের অপকর্মে লিপ্ত আছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লায় দীঘির পাড়ে যে মন্দিরে কোরআন শরীফ পাওয়ার গুজব ছড়ানো হচ্ছে, সেখানে অত্যন্ত শান্ত একটি পরিবেশ, হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। সেখানে রাতের বেলা মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, কোনো মানুষ ছিল না, লাইটও বন্ধ ছিল। সেই পরিস্থিতিতে কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে পুলিশ তদন্ত করছে। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, কারা ঘটিয়েছে সেটি খুব সহসাই বের হবে এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। উদ্দেশ্য পরিষ্কার, এটি যারা করেছে তারা আবার সেখানকার পুরোহিত যখন বললেন এটি সরিয়ে ফেলুন সেটি না করে তারা পুলিশে খবর দিয়েছে, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করার চেষ্টা করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়েছে। এতেই প্রমাণ হয় যে একটি মহল যারা সব সময় এই দুস্কর্মে যুক্ত তারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। পুলিশসহ অনেকগুলো সংস্থা তদন্ত করছে, তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে। ’ তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে একটি মহল সব সময় গুজব রটানোয় লিপ্ত আছে। তারা সবসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে গুজব রটিয়ে দেশের সম্প্রীতি শান্তি বিনষ্টের অপকর্মে লিপ্ত আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি স্থাপিত হয়েছে সেটি অনেক দেশের জন্য উদাহরণ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খিস্ট্রান সবার রক্তস্রোতের বিনিময়ে এই দেশ রচিত হয়েছে। একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ রচনার জন্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু একটি মহল যারা এই দেশের বিরুদ্ধাচারণ করেছিল, তারা দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির বিরুদ্ধে সব সময় ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থাকুক তারা তা চায় না। সেজন্য নানা সময়, নানা ধরনের গুজব রটাচ্ছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ছোটখাট ঘটনা ঘটিয়ে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা করা হয়েছে। গত কয়েক বছরের এমন ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এর পেছনে হীন উদ্দেশ্য ছিল, সরকার যেগুলো কঠোর হাতে দমন করেছে। তিনি বলেন, পদ্মাসেতুর পিলার স্থাপনের কাজ শুরুর পর গুজব রটিয়ে দেওয়া হয় সেখানে নরবলি দিতে হবে। এজন্য সারা দেশে ছেলেধরার গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হলো। অনেকগুলো নিরীহ মানুষ হত্যার শিকার হলো। এটি কারা করেছে? যারা বলেছিল পদ্মাসেতু এ সরকার করতে পারবে না, এ সরকারের আমলে কখনো পদ্মাসেতু হবে না। যারা পদ্মাসেতুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল, বিশ্ব ব্যাংককে তার সঙ্গে যুক্ত করেছিল। পরে বিশ্ব ব্যাংক কানাডার আদালতে হেরে যাওয়ায় প্রমাণ হয়েছে সব অভিযোগ অসত্য, সেই একই মহল এ গুজবও ছড়িয়েছে। এটিকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল পুলিশ তা কঠোর হাতে দমন করেছে। কুমিল্লায় পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি জনগণকে অনুরোধ জানাব কোনো গুজবে কান দেবেন না, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হয়, বিভ্রান্ত হবেন না। যারা গুজব ছড়ানোর চিন্তা করছেন ও করেছেন সবাইকে চিহ্নিত করা হবে। ভবিষ্যতে কেউ যদি এনিয়ে গুজব ছড়ায় তাদেরকে চিহ্নিত করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমি হিন্দু সম্প্রদায়কে অনুরোধ জানাব, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে, আপনারা নির্বিঘ্নে, নির্ভয়ে পূজা উৎসব পালন করুন, সরকার, জনগণ আপনাদের পাশে আছে। দুস্কৃতিকারীদের নিবৃত করতে আমরা বন্ধ পরিকর। ’ নাসিরনগরে সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িত কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অভিযুক্ত হলেই যে ঘটনা সত্য সেটি বলা যায় না।
কুমিল্লার ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে: তথ্যমন্ত্রী
0
Share.