খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের আসল রিপোর্ট সরিয়ে অন্য রিপোর্ট দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে: ফখরুল

0

ঢাকা অফিস: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের প্রকৃত রিপোর্ট সরিয়ে অন্য আরেকটি রিপোর্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘যতটুকু জানি, খালেদা জিয়ার যে মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল সেটি এখন পর্যন্ত আসেনি। আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, সেটিকে সরিয়ে দিয়ে অন্য কোনও রিপোর্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) গুলশানে একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি একথা বলেন। গোলটেবিল বৈঠক সঞ্চালন করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও পাকিস্তানসহ ১৫টি দেশের প্রতিনিধি এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া গত ১০ বছরে খুন-গুম হওয়া ব্যক্তিদের ২৭টি পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে লক্ষ করছি, খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে কারাগারে আটকে রাখার ব্যবস্থা করছে সরকার। এতে তার যে অধিকার এবং মানবাধিকার আছে সেটা লঙ্ঘন করছে সরকার। খালেদা জিয়াকে একটি মিথ্যা মামলায় ২০ মাস ধরে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। একই মামলায় অন্য আসামিরা সবাই জামিন পেয়েছেন এবং জামিনে আছেন। কিন্তু তাকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্নভাবে সরকার তার জামিন বাধাগ্রস্ত করছে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ যা আর কখনোই ছিল না। গত ১০ বছরে ভিন্নমতের কারণে ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলা দেওয়া হয়েছে এক লাখ আট হাজার ৪১৪টি। বিরোধী দলের এক হাজার ৫২৬ জন নেতা খুন হয়েছেন সরকারি দলের নেতাকর্মী ও পুলিশের হাতে। ৭৮১ জনকে গুম করা হয়েছে। এরমধ্যে বিএনপির ৪২৩ জন নেতাকর্মী গুম হয়েছে।’ ‘অগণতান্ত্রিক’ সরকার উন্নয়নের কথা বলে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার উন্নয়নের একটা মিথ তৈরি করে মানুষকে বোকা বানানো চেষ্টা করলে তা কখনও সফল হবে না।’ মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ গোলটেবিল বৈঠকে আসা কূটনীতিকদের হাতে ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ১১৯ পৃষ্ঠার একটি বই দেওয়া হয়। ‘Absence of Democracy and Systematic Human Rights Violation by State Apparatus’ বইতে গত ১০ বছরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ২৭টি মামলার সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে থাকা মামলার সংখ্যাও তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন মন্দিরে হামলার ছবি এবং বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যাসহ বিভিন্ন আলোকচিত্র দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে কূটনীতিকদের মধ্যে শুধু পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার শাহ ফয়সাল কাকার বক্তব্য রাখেন। তিনি তার বক্তব্যে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির অঞ্চলে ‘মুসলিম হত্যা’ নিয়ে কথা বলেন। এর বাইরে অন্য কোনও দেশের প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেননি। গোলটেবিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ।

Share.