গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার পৌরসভায় ভোটযুদ্ধ আজ

0

বাংলাদেশ থেকে বিশেষ প্রতিনিধি: সিলেটের গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার পৌরসভায় ভোটযুদ্ধ আজ শনিবার। ভোটের এ লড়াইয়ে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে ১৪৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৩ পৌরসভার মোট ভোটার ৭৮ হাজার ৭০৭ জন। ৬৮৭ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ৩৬টি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের ভোট গ্রহণ করবেন। নির্বাচনে থাকবেন ৩ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৩৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় আড়াই হাজার সদস্য। ৩ পৌরসভার রিটার্নিং কর্মকর্তারা সিলেটের ডাককে জানিয়েছেন, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ১৪ জন, কাউন্সিলর পদে ১০৫ জন ও সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর পদে ২৯ জন প্রার্থী লড়ছেন। ৩ পৌরসভার মোট ভোটার ৭৮ হাজার ৭০৭ জন। পুরুষ ভোটার ৪০ হাজার ৪৪৭ জন ও ৩৮ হাজার ২৬০ জন হলেন মহিলা ভোটার। মোট ভোটকেন্দ্র ৩৬টি ও ভোটকক্ষ ২১৭টি। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রিসাইডিং অফিসার ৩৬ জন, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ২১৭ জন ও ৪৩৪ জন হলেন পোলিং অফিসার। আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণ করা হবে। ৩য় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে এই ৩ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।সূত্রে জানা গেছে, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে ৪ প্রার্থী লড়ছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহেল আহমদ (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী ও দলের উপজেলা কমিটির সদস্য গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন (ধানের শীষ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও দলের পৌর সভাপতি বর্তমান মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল (জগ) এবং দলের নেতা, সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু (মোবাইল ফোন)। তবে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় বর্তমান মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল ও সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলুকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। কাউন্সিলর পদে ৪৭ জন ও সংরক্ষিত আসনে লড়ছেন ১০ নারী প্রার্থী। গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় মোট ভোটার ২২ হাজার ৯১৬ জন। পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ৬৯৪ জন ও মহিলা ভোটার হলেন ১১ হাজার ২২২ জন। ভোটকেন্দ্র ৯টি ও ভোট কক্ষ রয়েছে ৫৯টি। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুর রহমান রিপনকে হারিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সিরাজুল জব্বার চৌধুরী বিজয়ী হন। ২০১৮ সালের ৩১ মে সিরাজুল জব্বার চৌধুরী মৃত্যুবরণ করলে ৩ অক্টোবর উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাকারিয়া আহমদ পাপলুকে হারিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম রাবেল বিজয়ী হন। সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে ৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিল উদ্দিন (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী সাবেক মেয়র ইকবাল আহমদ তাপাদার (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি প্রার্থী আব্দুল মালেক ফারুক (লাঙ্গল), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফারুক আহমদ (জগ) ও আব্দুল আহাদ (নারিকেল গাছ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল-মামুন হীরা (চামচ), আল-ইসলাহের প্রার্থী হিফজুর রহমান (মোবাইল ফোন) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফরুল ইসলাম (হ্যাঙ্গার)। তবে বিদ্রোহী প্রার্থী ফারুক আহমদ (জগ) ও আব্দুল আহাদকে (নারিকেল গাছ) আওয়ামী লীগ বহিষ্কার করেছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।জকিগঞ্জ পৌরসভায় কাউন্সিলর পদে ৩১ জন ও সংরক্ষিত আসনে ৯ জন নারী প্রার্থী লড়ছেন। জকিগঞ্জ পৌরসভার মোট ভোটার ১২ হাজার ৩৪৫ জন। পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৩ জন ও মহিলা ভোটার ৬ হাজার ৩৪২ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ৯টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা ৩৩টি। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিফজুর রহমানকে পরাজিত করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিল উদ্দিন বিজয়ী হন। মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র ফজলুর রহমান নৌকা প্রতীকে এবং বিএনপি প্রার্থী মোঃ অলিউর রহমান ধানের শীষ প্রতীকে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। বিগত পৌর নির্বাচনে এই দু’জনকেই প্রার্থী দিয়েছিল প্রধান দুই দল। বিএনপি প্রার্থীকে হারিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফজলুর রহমান জয়ী হন।মৌলভীবাজার পৌরসভার মোট ভোটার ৪৩ হাজার ৪৪৬ জন। পুরুষ ভোটার ২২ হাজার ৭৫০ জন ও মহিলা ভোটার হলেন ২০ হাজার ৬৯৬ জন। কাউন্সিলর পদে ২৭ জন ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১০ নারী। মৌলভীবাজার পৌরসভার মোট ভোটকেন্দ্র ১৮টি ও ভোটকক্ষ ১২৫ টি।জানা গেছে, ৩ পৌরসভার সবকটি ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এজন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।মৌলভীবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও গোলাপগঞ্জ-জকিগঞ্জ পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ফয়সল কাদের বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকেই নির্বিঘ্নে ভোট দেবেন। এজন্যে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তৎপর থাকবে।

Share.