ঢাকা অফিস: ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা। রবিবার (১০ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা থেকে আঘাত হানার পর এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সঙ্গে চলছে ঝড়ো বাতাস। সাতক্ষীরার উপকূলবর্তী শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালীনি, মুন্সিগঞ্জ, রমজাননগর ও কাশিমাড়িসহ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া, খাজরা ও শ্রীউলা এলাকার অধিকাংশ কাঁচা ঘর ভেঙে গেছে। ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতি হয়েছে মাছের ঘের ও ধান ক্ষেতের। রাস্তায় গাছ পড়ে থাকায় উদ্ধার কাজ শুরু করা যায়নি। সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ‘ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূল হয়ে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল রবিবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা থেকে ৮১ কিলোমিটার বেগে সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানে। এটার পশ্চাৎভাগ এখনও সাতক্ষীরা উপকূলে বিরাজ করছে। কেন্দ্রভাগ এখন দেশের মোংলা সুন্দরবন উপকূলে প্রবেশ করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় ১৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ১০ নম্বর বিপদ সংকেত চলছে। ঝড়ের পশ্চাৎভাগ পার হতে আরও দুই ঘণ্টা লাগতে পারে।’ গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ৪ হাজার ঘর ভেঙে গেছে। মাছের ঘের তলিয়ে গেছে এবং গাছ উপড়ে পড়েছে। মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে নিরাপদে আছে।’ বুড়িগোয়ালীনি ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ মন্ডল বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে আমার ইউনিয়ন লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। বাতাসের তীব্রতা এত ছিল যে এখানকার অধিকাংশ গাছ উপড়ে গেছে। কাঁচা ঘর নষ্ট হয়ে গেছে, চালের টিন উড়ে গেছে। চিংড়ি ঘের ও ধানের জমি পানিতে একাকার হয়ে গেছে। নদীর পানি বাগায় আমার এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ বেঁড়িবাধ মেরামতের চেষ্টা করছি। এখন জোয়ারের চলছে। তাই সাধারণ মানুষ বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আতঙ্কে আছেন। রাস্তার গাছ সরাতে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী কাজ করছে।’ শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে প্রাণহানির কোনও খবর এখনও পাওয়া যায়নি। গাছপালা পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী কাজ করছে। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হওয়া মাত্র আমরা উদ্ধার কাজে নামবো।’
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে লণ্ডভণ্ড সাতক্ষীরা উপকূল
0
Share.