ঢাকা অফিস: চীনের উপহারের পাঁচ লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা ঢাকায় পৌঁছেছে। আজ বুধবার ভোরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বঙ্গবন্ধু বিমান ঘাঁটিতে টিকা নিয়ে বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজ অবতরণ করে।চীনের কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করোনার টিকা ‘সিনোভ্যাক’-এর পাঁচ লাখ ডোজ বহন করে আনা বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজটি অবতরণের পর কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ও চীনের পতাকা সংবলিত একটি ব্যানার প্রদর্শন করেন। যেখানে চীনা ও বাংলা ভাষায় লেখা রয়েছে, ‘ভালবাসার নৌকা পাহাড় বাইয়া চলে।’বুধবার সকাল ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ভার্চুয়াল এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে টিকা হস্তান্তর করা হবে। সেখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকার চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তারা যুক্ত থাকবেন। বুধবার সকালে চীনের বাংলাদেশ দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনালের বাংলা সার্ভিসের একটি লাইভ ভিডিও শেয়ার করা হয়। সেখানে এ তথ্য জানানো হয়।টিকা আনতে চীনে যাওয়া বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার হাবিবুর রহমান উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টিকাগুলো নিয়ে আমরা চীন থেকে রওনা দিয়েছি। তারা জানিয়েছে, যে কনটেইনারে দিয়েছে তাতে ৭২ ঘণ্টা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আমরা ১২ ঘণ্টা ব্যয় করেছি। আনুষ্ঠানিকতা শেষে এগুলো সরকারি হিমাগারে রাখা হবে।’এর আগে করোনার টিকা আনতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি উড়োজাহাজ গতকাল মঙ্গলবার চীনের রাজধানী বেইজিং যায়। মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, বিমানবাহিনীর একটি সি-১৩০ জে পরিবহণ উড়োজাহাজ সকাল ৮টা ১২ মিনিটে করোনার পাঁচ লাখ ডোজ টিকা আনতে চীনের উদ্দেশে যাত্রা করেছে।গত সোমবার বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, সিনোফার্মের তৈরি পাঁচ লাখ করোনার টিকা ১২ মে বাংলাদেশে আসবে। ঢাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল এক মতবিনিময় সভায় চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, চীনের টিকার চাহিদা অনেক দেশের আছে। তাই বাণিজ্যিকভাবে যেটা বাংলাদেশ পেতে চায়, সেই টিকা পেতে বাংলাদেশের সময় লাগবে। তা ছাড়া বাংলাদেশ এক সপ্তাহ আগে শুধু সিনোফার্মের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।বাংলাদেশ সরকার এর আগে জানায়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকারিতা, নিরাপত্তা ও মান বিবেচনায় চীনের টীকা উত্তীর্ণ হয়েছে। ফলে বাংলাদেশে টিকাটির জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।পাঁচ লাখ ডোজ টিকার মধ্যে থেকে এক হাজার মানুষের শরীরে প্রথমে প্রয়োগ করা হবে এবং পর্যবেক্ষণ করা হবে কোনো প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কি না। এরপর যথাযথ নিয়মে টিকাদান কার্যক্রমে এগুলোর ব্যবহার শুরু হবে।অন্যদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) চীনের কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করোনার টিকা সিনোভ্যাক জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের জন্য করোনা টিকার তহবিল কোভ্যাক্স এই টিকা কিনবে বলেও জানানো হয়।সিনোফার্মের টিকাটি মাত্র ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অর্থাৎ সাধারণ রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা যায়। এ কারণে এই টিকাকে সহজে সংরক্ষণযোগ্য টিকাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
চীনের উপহারের ৫ লাখ ডোজ টিকা ঢাকায় পৌঁছাল
0
Share.