ডেস্ক রিপোর্ট: করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক কাটেনি, বরং প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। রবিবারও প্রতিষেধকবিহীন এই ভাইরাসে মারা গেছেন অন্তত ৯৭ জন, যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ। এর মধ্যেই সোমবার কাজে ফিরতে শুরু করেছে চীনারা। দেশটির বেশ কিছু অঞ্চলে অফিস-আদালত, কল-কারখানা আংশিক চালু হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো ধরা পড়ে করোনা ভাইরাস। এরপর থেকে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। মানুষ থেকে মানুষে সহজেই ছড়িয়ে পড়ায় ভাইরাসটির সংক্রমণ এড়াতে বেশ কয়েকটি শহরে যান চলাচল ও কল-কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে চীন। জানুয়ারির শেষের দিকে চীনা নববর্ষের ছুটি শেষে সেগুলো আবার চালু হওয়ার কথা থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ছুটি আরও ১০ দিন বাড়ানো হয়। বর্ধিত ছুটি শেষে সোমবার থেকে আবার কর্মচাঞ্চল্য শুরু হয়েছে সেখানে। তবে দেশটিতে এখনও অসংখ্য কর্মক্ষেত্র বন্ধ। কিছু কিছু লোক বাসায় বসেই অফিসের কাজ করছেন। দেশটির অন্যতম ব্যস্ত শহর বেইজিংয়ের রেল-মেট্রোরেলগুলো প্রায় যাত্রীশূন্য। দিনের শুরুতে রাস্তায় অল্প কিছু পথচারী দেখা গেছে, যাদের সবারই মুখে মাস্ক পরা। গুয়াংডং, আনহুই, ঝেজিয়াং, হেলংজিয়াং, জিয়াংসু, শাংডং, হেবেই, জিয়াংজি, মধ্য মঙ্গোলিয়াসহ সাংহাই, চংকিংয়ের মতো প্রদেশ বা অঞ্চলগুলোতে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে সব স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর আগেই ভাইরাসের উৎসস্থল হুবেই প্রদেশ অবরুদ্ধ ঘোষণা করেছিল চীনের কেন্দ্রীয় সরকার। ছয় কোটি বাসিন্দার প্রদেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ২৯ হাজার ৬৩১ জন। আর বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ১৭১ জন। রবিবার চীনে নভেল করোনা ভাইরাসে মারা গেছেন আরও ৯৭ জন, যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। এ নিয়ে দেশটির মূল ভূখণ্ডেই মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০৮ জন। এছাড়া হংকং ও ফিলিপাইনে মারা গেছেন আরও দুইজন, তারাও চীনা নাগরিক। উহানে এখন পর্যন্ত একমাত্র বিদেশি হিসেবে এক জাপানি নাগরিক মারা গেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরেক মার্কিনি। রবিবার করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২০০২-০৩ সালে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্সকেও (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) ছাড়িয়ে গেছে। সে সময় সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের ২৪টিরও বেশি দেশে মোট ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়, আক্রান্ত হয় ৮ হাজার ৯৮ জন। এখন পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে নভেল করোনা ভাইরাস। চীন ছাড়া এসব দেশ ও অঞ্চলে ৩৩০ জনের বেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। চীনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা সিঙ্গাপুরে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজে ফিরছে চীনারা
0
Share.