ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে শুক্রবারও রাজধানী দিল্লিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। গত শুক্রবারের মতো এবারও বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু ছিল দিল্লির জামে মসজিদ প্রাঙ্গন। নামাজ শেষে কয়েকশ মুসল্লি বিক্ষোভে অংশ নেন। পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এখবর জানিয়েছে। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, জুমার নামাজের পর বিক্ষোভের আশঙ্কায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্ণৌসহ ২১ জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়েছে। রাজধানী দিল্লিসহ বিভিন্ন স্থানে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। কোথাও কোথাও সমাবেশ-জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। উত্তর প্রদেশে এই নিষেধাজ্ঞা এক সপ্তাহ ধরে জারি রয়েছে। এসব বিধিনিষেধ সত্ত্বেও জুমার নামাজের পর দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা, আহমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু ও চেন্নাইয়ে বড় ধরনের বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছিলেন। শুক্রবার দিল্লি জামে মসজিদে শীত ও বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে বিক্ষোভ করেন কয়েকশ মুসল্লি। তারা বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এক বিক্ষোভকারী বলেন, এই দেশের এনআরসি, এনপিআর প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন চাকরি। প্রয়োজন শান্তি ও সৌহার্দ্য। বিক্ষোভকারীদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ডও ছিল। কয়েকটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল সহিংসতা পরিহার করে অহিংস প্রতিবাদ করার আহ্বান। কংগ্রেস নেতা অলকা লাম্বা ও দিল্লির সাবেক এমএলএ শোয়েব ইকবাল বিক্ষোভে যোগ দেন। জামে মসজিদ এলাকা ছাড়াও দিল্লির বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। ভিম আর্মি প্রধান চন্দ্র শেখর আজাদের মুক্তির দাবিতে একটি মিছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনের দিকে এগিয়ে গেলে লোক কল্যান মার্গে প্রবেশ ও বের হওয়ার ফটক বন্ধ করে দেয় দিল্লি মেট্রো রেল করপোরেশন। গত শুক্রবার বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ায় গ্রেফতার করা হয় আজাদকে। ওই দিন জুমার নামাজ শেষ হতেই নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে জামা মসজিদ চত্বর। ভীম আর্মির তরফে জামা মসজিদ থেকে যন্তরমন্তর পর্যন্ত মিছিলের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা না পাওয়ায় মসজিদের সামনের রাস্তাতেই উত্তাল বিক্ষোভ শুরু হয়। উপস্থিত ছিলেন ভিম আর্মির প্রধান। পরিস্থিতি সামাল দিতে দিল্লির তিনটি মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ ও বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় রাজধানীর মেট্রো পরিষেবা। হাতে সংবিধান নিয়ে বক্তৃতা শুরু করতেই চন্দ্রশেখর আজাদকে আটক করে দিল্লি পুলিশ। পরে পালিয়ে যান চন্দ্রশেখর। যদিও পরে আবার পুলিশ তাকে আটক করেছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর ভারতের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের পর থেকেই দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ চলছে। এসব বিক্ষোভে-সহিংসতায় নিহত হয়েছে সারাদেশে অন্তত ২৫ জন। এর মধ্যে শুধু উত্তর প্রদেশেই নিহত হয়েছে ২১ জন।