টাঙ্গাইলে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ

0

বাংলাদেশ থেকে টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলে এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তিন জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন এ রায় দেন। রায়ে অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় একজনকে খালাস দেয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ভেঙ্গুলা গ্রামের মৃত নগেন চন্দ্র দাসের ছেলে কৃষ্ণ চন্দ্র দাস (২৮), ধনবাড়ী উপজেলার ইসপিনজারপুর গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে সৌরভ আহম্মেদ হৃদয় (২৩) এবং মৃত মজিবর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান (৩৭)। খালাসপ্রাপ্ত হয়েছেন মেহেদী হাসান টিটু (২৮)। মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, গোপালপুর উপজেলার জয়নগর গ্রামের এক স্কুল ছাত্রীর সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে কৃষ্ণ চন্দ্র দাসের সাথে। বিগত ২০২১ সালের (২ আগস্ট) বেলা ১১ টার দিকে নানীর বাড়ি যাওয়ার কথা বলে ওই স্কুল ছাত্রী বাড়ি থেকে বের হয়। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কে বীরভরুয়া নামকস্থান থেকে গত বছরের (৩ আগস্ট) এক অজ্ঞাত যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিচয় না পেয়ে মরদেহটি বেওয়ারিশ হিসেবে স্থানীয় ভূঞাপুরের ছাব্বিশা গোরস্থানে দাফন করা হয়। ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে টাঙ্গাইল পিবিআই স্বপ্রণোদিত হয়ে গত (৫ আগস্ট) মামলাটির দায়িত্ব নেয়। বিভিন্ন সোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ধনবাড়ী উপজেলার বলিভদ্র ইউনিয়নের ইসপিনজারপুর গ্রামে মৃত মজিবর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমানের ভাড়া বাড়িতে যোগাযোগ করে। তদন্ত টিম মিজানুরকে কৌশলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদকালে তার ঘরে পড়ে থাকা মোবাইল ফোনের পরিত্যক্ত একটি বাক্স কুড়িয়ে পায়। বাক্সটিতে দুটি মোবাইল ফোনের ভাঙ্গা অংশ ছিল। পরে ওই বাক্সের গায়ে লেখা আইএমই নম্বরের সূত্র ধরে অজ্ঞাত ওই স্কুল ছাত্রীর বাবার সন্ধান পান। ছবি ও পরনের কাপড় দেখে ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা অজ্ঞাত ওই যুবতী তার মেয়ে বলে শনাক্ত করেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তদন্ত কাজ দ্রুত এগুতে থাকে। তদন্ত টিম তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে সোর্সের মাধ্যমে এসএসসি পরীক্ষার্থী স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ঘাতক প্রেমিকসহ চার যুবককে গ্রেফতার করেন। বিগত ২০২১ সালের (৬ আগস্ট) নিহত ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে হত্যার রহস্য ও আসামিদের নাম বেরিয়ে আসে। মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে ধর্ষণের পর হত্যার কথা উল্লেখ করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁশুলী (পিপি) আলী আহমদ বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে তাদের অপরাধ প্রমাণ করেছে। এই কারণেই আদালত তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। আরও একজনে খালাস প্রদান করেছেন। এ রায়ে বাদি পক্ষ ও আমরা সন্তুষ্ট।

Share.