ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইসরায়েল ঘেঁষা মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিন। একইসঙ্গে এ ইস্যুতে আরব লিগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জরুরি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। মঙ্গলবার ইসরায়েলি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণার দিনই এ আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। কায়রোতে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত এবং আরব লিগে দেশটির স্থায়ী প্রতিনিধি দিয়াব আল লৌহ এ নিজ দেশের এমন উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর। দিয়াব আল লৌহ বলেন, ট্রাম্পের কথিত ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ মোকাবিলার উপায়গুলো নিয়ে আলোচনার জন্য আরব লিগের একটি বিশেষ অধিবেশন চেয়েছে ফিলিস্তিন। এ অধিবেশন আহ্বানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। আগামী শনিবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক জেরুজালেম শহরকে ইসরায়েলি ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলি দখলদারিত্বের ফলে শরণার্থীতে পরিণত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। জর্দান নদীর পশ্চিম তীরের অংশবিশেষ ও গাজা উপত্যকা নিয়ে নামমাত্র একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে; যে রাষ্ট্রের নিজস্ব কোনও সেনাবাহিনী থাকবে না। ট্রাম্পের ইহুদি ধর্মাবলম্বী জামাতা জ্যারেড কুশনারের তত্ত্বাবধানে ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ নামের এই পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করা হয়েছে। মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়ে এটি উন্মোচনকালে ট্রাম্প বলেন, ফিলিস্তিনিরা দারিদ্র্য ও সহিংসতার মধ্যে বাস করছে। যারা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ ছড়াতে চায় তাদের দাবার ঘুঁটি হিসেবে তারা ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যদিকে, শান্তির পথে ইসরায়েল আজ বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। পরিকল্পনাটি প্রকাশ উপলক্ষে সোমবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও বিরোধী দলীয় নেতা বেনি গান্তজ। নেতানিয়াহু ওই দিন ট্রাম্পকে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে এ পরিকল্পনার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, শতাব্দীর সেরা চুক্তি হলো শতাব্দীর সেরা সুযোগ। আমরা তা এড়িয়ে যাবো না। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, বুধবার প্রস্তাবটি নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কো যাবেন নেতানিয়াহু।
উল্লেখ্য, ঐতিহাসিকভাবেই মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ইসরায়েল-ঘেঁষা। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী স্বীকৃতির ঘোষণা দেন। এর পরে ইসরায়েলের সঙ্গে আর কোনও শান্তি আলোচনায় মার্কিন মধ্যস্ততা মানবে না বলে ঘোষণা দেয় ফিলিস্তিনিরা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বারবারই ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি বা শতাব্দীর সেরা চুক্তি নামে পরিচিত একটি শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণার কথা বলা হয়েছে।