ঢাকা অফিস: কোভিড আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা নারীদের সেবা দেওয়া চিকিৎসকদের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বলছেন, এই মুহূর্তে চরম ঝুঁকিতে আছেন তারা। বেশিরভাগকেই সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়েও বাঁচানো যাচ্ছে না। এছাড়া গত কয়েকদিনে দেশের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল ঢাকা মেডিকেলে প্রায় ১০গুণ বেড়েছে কোভিড আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যাও।বেসরকারি চাকরিজীবী মো. রুবেল তার ৮ মাসের করোনা পজিটিভ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। এখানে করোনা পজিটিভ প্রসূতি নারীর জন্য চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ছুটছেন অন্য হাসপাতালে। কদিন আগে করোনার থাবায় মাকে হারিয়েছেন এই তরুণ। এবার স্ত্রীকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা। গাড়ি সংকটের কারণে পিকাপ ভ্যানে করেই স্ত্রীকে নিয়ে রওনা দেন।রাজধানীর হাসপাতালগুলোর বাইরের চত্বর, অপেক্ষমান লবিতে দিনভর শুধুই কান্নার শব্দ। বাস্তবতার কাছে ফিকে হয়েছে ছুটির দিন, তাই শুক্রবারেও (৩০ জুলাই) প্রতিটি হাসপাতালে একের পর এক আসছে করোনা আক্রান্তরা। অক্সিজেন, শয্যা আর আইসিইউ সংকট চরম হওয়ায় ফিরে যাচ্ছেন অসংখ্য রোগী। স্বজনরা বলছেন, রোগীর অক্সিজেন দরকার। কিন্তু এখানে অক্সিজেন নেই। সিটও নেই। ঢাকা মেডিকেলের তথ্য বলছে, গত কয়েকদিনে কোভিড পজিটিভ শিশু রোগীদের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। এদিকে, অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ক্রিটিক্যাল কেয়ারে নিয়েও অধিকাংশদের শেষ রক্ষা হচ্ছে না।ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নাজমুল হক বলেন, অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের সবকটা শয্যা পরিপূর্ণ। প্রেগনেন্সির শেষের দিকে এরা অনেকেই ভালোভাবে অসুস্থ হয় এবং আমাদের আইসিইউতে নিতে হয়। জরুরি অপারেশন করতে হয় এবং অনেক মা ও বাচ্চাদের ক্রিটিক্যাল স্টেজ থেকে ফেরত আনতে পারি না। করোনা ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে সন্তানসম্ভবা নারী, শিশু ও বয়স্কদের সর্বাধিক সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।এদিকে, মহামারি করোনার ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে পুরো বিশ্ব। করোনার নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের কাছে বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোও ধরাশায়ী। পৃথিবীজুড়ে টিকা কার্যক্রম চললেও থামছে না সংক্রমণের গতি।করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (৩০ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা ও সংক্রমণ বেড়েছে। এ সময় মারা গেছেন আরও ১০ হাজার ১৮৬ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৭৮৪ জন।
ঢাকার হাসপাতালের ভেতর-বাইরে শুধুই কান্নার শব্দ
0
Share.