ঢাকা অফিস: আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে করোনাভাইরাসের টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধনের শুরুতেই টিকা গ্রহণ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এরপর টিকা নেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। জানা গেছে, এ হাসপাতাল থেকে মোট ১৬২ জন টিকা কার্যক্রমের প্রথম দিন টিকা নেবেন।এর আগে এদিন সকাল ৯টার পর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) থেকে করোনাভাইরাসের টিকা নেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জিনাত হকসহ তিন বিচারপতি। অন্য দুই বিচারপতি হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহমান ও একই বেঞ্চের বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান।রাজধানীর পাশাপাশি দেশের জেলা ও উপজেলা সদরের হাসপাতালগুলোতে একযোগে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদেরই প্রথমে ভ্যাকসিন নিতে দেখা গেছে।এদিন ঢাকার পার্শ্ববর্তী সাভার সেনানিবাসে অবস্থিত সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়।নারায়ণগঞ্জ জেলায় দুটি সরকারি হাসপাতালসহ চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার টিকা প্রদান শুরু হয়। সকালে সাড়ে ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে জেলা সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ প্রথম করোনা টিকা নিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করেন। টাঙ্গাইলের ১২ উপজেলায় টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলার মোট ৪২টি কেন্দ্রে নিবন্ধিত ব্যক্তিদের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে টাঙ্গাইলের জেলা প্রসাশক ডক্টর আতাউল গনি প্রথম টিকা নেয়ার মাধ্যমে টিকা প্রদান কার্যক্রমের শুরু হয়।চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালসহ ও ১৪ উপজেলায় করোনা টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। বেলা সাড়ে ১০টায় নিজেই টিকা নিয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। শিক্ষা উপমন্ত্রীর টিকাগ্রহণের পরপর সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম হুমায়ুন কবীর, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবিরসহ দায়িত্বশীল টিকা নেন।সিলেটে সকালে ওসমানী হাসপাতালের বুথে টিকা দেয়া শুরু হয়। সকাল ১০টায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করেন। আর সিলেটে ভার্চুয়াল বক্তব্যের মাধ্যমে সিলেটে টিকাদান কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।হবিগঞ্জের বেলা ১১টায় হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আবু জাহির সর্ব প্রথম টিকা গ্রহণ করে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এরপর টিকা দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।বগুড়ায় বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হকের টিকা নেয়ার মধ্য দিয়ে বগুড়ায় করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান শুরু হয়। এরপর পুলিশ সুপার আলী আশরাফসহ নিবন্ধনকৃত ব্যক্তিরা টিকা গ্রহণ করেন।লক্ষ্মীপুরে প্রথম ধাপে বিভিন্ন পেশার সম্মুখযোদ্ধা ৩০ হাজার জনকে করোনার টিকা দেয়া কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রোববার স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে একযোগে জেলার ৫টি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর মোট ১১টি বুথে এ কার্যক্রম শুরু হয়। ১ম দিনে ২২শ’ জনকে টিকা দেয়া হচ্ছে বলে জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ।কুষ্টিয়ায় বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ। আজ কুষ্টিয়ায় নিবন্ধন করা প্রায় একশ জনের করোনা টিকা দেয়া হয়। জেনারেল হাসপাতালের চারটি বুথে এই টিকা দেওয়া হয়।নড়াইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান প্রথম টিকা গ্রহণ করেন করোনার টিকা কার্যক্রমের শুরু করেন। এর আগে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা।বরিশাল জেলার ৯টি উপজেলাসহ সিটি করপোরেশন এলাকায় ওইদিন টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রোববার বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল টিকা কেন্দ্রে বরিশাল নগরীর ও সদর উপজেলার টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সিটি করপোরেশন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।চুয়াডাঙ্গায় রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে করোনার টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ারদার ছেলুন। প্রথমে জেলার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসানকে দেয়া হয়। প্রথম দিন ৪২০ জনকে টিকা দেয়া হবে।রাজশাহীতে রোববার সকাল ১০টা থেকে ১১টি কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সকাল ১০টায় করোনার প্রথম টিকা নেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। রাজশাহীতে প্রথম পর্যায়ে ১ লাখ ৮০ হাজার ডোজ করোনার টিকা পৌঁছেছে। এখন পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন সাড়ে ৭ হাজার মানুষ।ভোলায় প্রথম দিন সাবেক সিভিল সার্জন রথীন্দ্র নাথ মজুমদার সস্ত্রীক ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ডা. খাদিজা বেগমের টিকা নেয়ার মধ্য দিয়ে রোববার সকালে উদ্বোধন করা হয়েছে করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রম।ফেনীতে রোববার সকাল সাড়ে দশটায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালে অস্থায়ী স্থাপিত বুথে টিকা প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গোলাম জাকারিয়া ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মইনুল হোসেন। জেলার মোট ২৪ হাজার মানুষকে ৪৮ হাজার ডোজ টিকা দেয়া হবে। এজন্য জেলা জুড়ে ১৯টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে।কুমিল্লায় করোনাভাইরাস প্রতিষেধক টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফ্রন্টলাইনারদের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্নকারীদের মধ্যে রোববার সকালে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীরকে টিকা দিয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার নিয়াতুজ্জামান জানিয়েছেন, জেলা সদর হাসপাতাল, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সিটি করপোরেশন কেন্দ্র ছাড়াও জেলা ১৭ উপজেলায় টিকা দেয়া হচ্ছে। কুমিল্লার জন্য প্রাপ্ত ২ লাখ ৮৮ হাজার ডোজ টিকা ১ লাখ ৪৪ হাজার লোককে দুই ডোজের মাধ্যমে দেয়া হবে।পটুয়াখালীতে সকাল ১০টা থেকে জেলার মোট ৮টি হাসপাতালে একযোগে করোনার টিকা দেয়া শুরু হয়। পটুয়াখালী মেডিকেল কলজে হাসপাতাল ৮টি বুথ এবং প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালে তিনটি করে বুথ এবং পুলিশ সদস্যদের জন্য পুলিশ হাসপাতালে একটি বুথের মাধ্যমে টিকা দেয়া হচ্ছে।নওগাঁয় রোববার সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে করোনার টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। নওগাঁ সদর হাসপাতালের নতুন ভবনের ৩য় তলায় প্রথমে জেলা প্রশাসক মো. হারুন অর রশিদ, পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া, সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম আবু হানিফ টিকা গ্রহণের মধ্য দিয়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু হয়। জেলা সদরে ৫টি বুথে মোট ১১০ জনকে টিকা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও নওগাঁর ১১টি উপজেলায় ৩০ বুথে এসব টিকা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও জেলায় এ পর্যন্ত ৬ হাজার ব্যক্তি টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন।হাতিয়ায় করোনার ফোকাল পারসন ডাক্তার নিজাম উদ্দিন মিজানকে প্রথম টিকা প্রদানের মধ্য দিয়ে নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় শুরু হলো করোনার টিকা প্রদান কর্মসূচী। রোববার সকালে উপজেলা সদরে বীর মুক্তিযোদ্ধা কম্পপ্লেক্সে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী।ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলায় রোববার সকালে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি। উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে আসতে সবাইকে দ্রুত ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। স্বাভাবিকভাবে সবাই কাজ করতে পারলে সচল থাকবে অর্থনীতির চাকা। আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে তিনি নিজেও ভ্যাকসিন গ্রহণের কথা জানান।এছাড়াও খাগড়াছড়ি, যশোর, রাঙামাটি, নরসিংদী, পাবনা, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, দিনাজপুরের হিলি, গাজীপুরের কালিয়াকৈর করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রমের শুরু হয়েছে।
ঢাকাসহ জেলায় জেলায় দেওয়া হচ্ছে করোনার টিকা
0
Share.