তিন শিক্ষকের শাস্তি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

0

বাংলাদেশ থেকে খুলনা জেলা প্রতিনিধি: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) তিন শিক্ষকের শাস্তি প্রত্যাহারের দাবিতে টানা পঞ্চম দিনের মত প্রতিবাদের অংশ হিসেবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার উচ্চ আদালতে শাস্তির আদেশ স্থগিতে রুল জারি হয়। এরপর প্রশাসনকে বিশেষ সিন্ডিকেট সভা ডেকে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টায় ৬ জন শিক্ষক ও বেলা ১টায় প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবনের সামনে উচ্চ আদালতকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, আমরা দেখেছি, যিনি সিন্ডিকেট সদস্য তিনিই আবার বিচারকের ভূমিকা পালন করেছেন, তিনিই আবার সাক্ষী দিয়েছেন। অর্থাৎ একই ব্যক্তির দ্বৈত রূপ। এটা অগণতান্ত্রিক ও নিয়ম বহির্ভূত।তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই মহামান্য আদালত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে চাকুরীচ্যুত ৩ শিক্ষককে স্বপদে পুনঃবহাল করবেন।’অপরদিকে শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলনে তিন শিক্ষককে স্বপদে পুনঃবহালের দাবি জানিয়ে আতিদ তূর্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি মহামান্য আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে বিষয়টিকে যেন আর নোংরা না করা হয় এবং জনগণের অর্থ অপচয় না করা হয়। গত ২৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ২১২তম সভায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উস্কানি, অসদাচরণ, প্রশাসনবিরোধী কার্যক্রমসহ নানা অভিযোগে বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজলকে বরখাস্ত এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী ও বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শাকিলা আলমকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।এরপর ৪ ফেব্রুয়ারী তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিগত ২৮ জানুয়ারী ২০২১ তারিখে চাকুরিচ্যুতি ও অপসারণ আদেশের বিরুদ্ধে রিট আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালতে এই আদেশ স্থগিতে রুল জারি হয়।সিন্ডিকেট সভা আয়োজনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে কোন উপাচার্য নেই এবং উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব ছাড়া উপ-উপাচার্য আর কোন দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তাই এই মুহুর্তে সিন্ডিকেট সভা আয়োজনের সুযোগ নেই।এছাড়া উচ্চ আদালতের আদেশের বিষয়ে তিনি বলেন, হাইকোর্টের আদেশের কোন কপি এখনো হাতে পাইনি। এগুলো হাতে পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট আইনজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্যার সমন্বয়ে এক হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে তিন শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করা হয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার আদেশ স্থগিত করে ওই তিন শিক্ষককে চাকরিতে বহাল রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

Share.