ঢাকা অফিস: গ্রাহকদের দেনা পরিশোধসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবসার সার্বিক তথ্য সরবরাহের জন্য অনলাইন মার্কেটপ্লেস ইভ্যালিকে তিন সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।বুধবার (১১ আগস্ট) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।সভাশেষে, হাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, গ্রাহকের কাছে মোট কত দায় রয়েছে, গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া অর্থের বিনিময়ে কত পণ্য দেওয়ার কথা, এসব পণ্য সরবরাহে প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা কী রয়েছে ইত্যাদি এ সময়ের মধ্যে জানাতে হবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে। এছাড়া, ব্যবসায়ী পর্যায়ে কত টাকার দেনা-পাওনা রয়েছে তাও জানাতে হবে। এসব ব্যাখ্যা দিতে কত সময় লাগবে, সেটি বিবেচনায় নিয়েই তিন সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান হাফিজুর রহমান।এছাড়া, ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা এবং ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা না মেনে ইভ্যালি ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে কিনা সেটির যৌক্তিক ব্যাখ্যা দেওয়ার কথা বলা হয়।অতিরিক্ত সচিব জানান, এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া ছয়টি বিষয়ের জবাব দিতে ছয় মাস সময় চেয়েছিল প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইভ্যালিকে তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে জবাব না দিলে করণীয় জানতে চাইলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান তিনি।জানা গেছে, গত ১ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ছয় মাস সময় চেয়ে ইভ্যালি জানিয়েছে, তৃতীয় কোনো নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইভ্যালির আর্থিক দিক অডিট করানো হবে। এ কারণে মন্ত্রণালয়ের চাওয়া সার্বিক তথ্য জমা দিতে ছয় মাস সময় লাগবে।এছাড়া, এ সময়ের মধ্যে প্রতিশ্রুত পণ্যের সরবরাহ করার পাশাপাশি প্রতি ১৫ দিন পর পর সরবরাহের অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার কথা জানানো হয়। এর আগে গত ১৯ জুলাই কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সে মর্মে ইভ্যালিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সুনির্দিষ্ট ৬টি বিষয় সম্পর্কে ব্যাখা চাওয়া হয় ওই নোটিশে। এর জবাব দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১ আগস্ট। জবাবের পরিবর্তে ৬ মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল।ইভ্যালির বিরুদ্ধে ক্রেতার কাছ থেকে আগাম টাকা নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করা এবং মার্চেন্টদের পাওনা পরিশোধ না করার অভিযোগ ওঠে। এ কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইভ্যালিতে তদন্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদন্ত করে গত ১৬ জুন প্রতিবেদন জমা দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে দেখা গেছে, গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত ক্রেতাদের থেকে ২১৪ কোটি এবং মার্চেন্টদের কাছে ১৯০ কোটি টাকা দায় রয়েছে। ওই সময়ে ইভ্যালির কাছে সম্পদ ছিল প্রায় ৯২ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৬৫ কোটি টাকা চলতি মূলধন।ক্রেতা ও মার্চেন্টদের বিপুল পরিমাণ টাকা তাহলে কোথায় গেল এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক পরিস্থিতির এ চিত্র উঠে আসার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ক্রেতা ও মার্চেন্টদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে ইভ্যালির কাছে গ্রাহকের বকেয়া পাওনার তথ্য এবং ভবিষ্যতে কীভাবে এসব দেনা পরিশোধ করা হবে তার পরিকল্পনা জানতে চায়।একইসঙ্গে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের সুরক্ষা এবং ডিজিটাল কমার্স খাতের নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধের লক্ষ্য ইভ্যালির বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়।
তিন সপ্তাহ সময় পেল ইভ্যালি
0
Share.