ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি খাত সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী, শোধনকারী প্রতিষ্ঠান এবং পাইপলাইন কোম্পানিগুলো দেউলিয়া হতে চলেছে। ভারী ঋণের চাপ, চাহিদা ও যোগানের তীব্র অসামঞ্জস্যে বিপর্যস্ত এ প্রতিষ্ঠানগুলো। করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে জ্বালানির চাহিদা প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। একইসঙ্গে সৌদি আরব ও রাশিয়ার মূল্যযুদ্ধে বাজারে ক্রুড তেলের যোগান ছিল অতিরিক্ত। যদিও গত কয়েক বছরে বিশ্বের সর্বাধিক তেল উৎপাদনকারী দেশ হয়ে উঠছিল যুক্তরাষ্ট্র, লাভ কম হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা আগে থেকেই অসন্তুষ্ট ছিলেন। এরই মধ্যে সোমবার (২০ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম ঋণাত্মক হয়ে যায়। এদিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম কমে প্রতি ব্যারেল মাইনাস ৩৭ দশমিক ৬৩ মার্কিন ডলার হয়েছে, যা অভূতপূর্ব। ইতোমধ্যেই তেল উৎপাদনের পরিমাণ এবং ব্যয় অনেকাংশে কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল দেশটির উৎপাদনকারীরা কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। জ্বালানি সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ৬০ স্বাধীন তেল উৎপাদনকারীর প্রায় অর্ধেকই অর্থের তারল্য নিশ্চিতের বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। দামের এ ধস গোটা শিল্প এবং এ খাতে কর্মরত সবার ওপর প্রভাব ফেলবে। দামে ধস নামার আগে যেসব প্রতিষ্ঠান ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছিল, যেমন তেলের বিশাল প্রতিষ্ঠান অক্সিডেন্টাল পেট্রোলিয়াম কর্প এখন শেয়ারহোল্ডারদের শান্ত করতে এবং নগদ অর্থ হাতে রাখার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। অসংখ্য মিডস্ট্রিম তেল কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার পথে। এ পরিপ্রেক্ষিতে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের মালিকানা দ্রুতই বড় ব্যাংকগুলোর আয়ত্তে চলে যেতে পারে। সূত্র জানায়, সামনে সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের শেল প্রোডিউসার বা জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হওয়া থেকে সুরক্ষা চাইতে যাচ্ছে। চলতি মাসেই এ আবেদন জানিয়েছে হোয়াইটিং পেট্রোলিয়াম প্রতিষ্ঠানটি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উৎপাদনকারীদের অনেকেই ঋণ উপদেষ্টার পরামর্শ নিতে শুরু করেছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ হবে ১৮ শতাংশ। প্রিলে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে, তেলের দাম ৩০ ডলার প্রতি ব্যারেলের কাছকাছি থাকলে এক বছরের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ জ্বালানি প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, বুধবার (২২ এপ্রিল) ক্রুড অয়েলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ১৪ ডলার।
দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি শিল্প
0
Share.