ঢাকা অফিস: কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেড় লাখ পশু নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় ভোলার খামারিরা। চলমান লকডাউনের কারণে পশু হাটে তোলা ও বিক্রি নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা সংকট। আর যেভাবে করোনার ঢেউ চলছে তাতে দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না কোনোভাবেই। শুধু তাই নয়, স্থানীয় চাহিদার চেয়ে বেশি ৫০ হাজার গরু-মহিষ বিক্রি নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।গত বছর লোকসানের পর আসন্ন ঈদ পর্যন্ত লকডাউন চলমান থাকলে মূলধন হারানোর আশঙ্কায় রয়েছে প্রান্তিক কৃষক ও খামারিরা। তবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ অনলাইনে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত সাড়া পড়েনি।জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভোলা জেলায় এক লাখ ২ হাজার পশুর চাহিদা রয়েছে। তবে অধিক লাভের আশায় জেলার ৯৭৫ খামারি ও পারিবারিক পর্যায়ে প্রায় দেড় লাখ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে কোরবানির জন্য।চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত প্রায় ৫০ হাজার গরু-মহিষ ঢাকা চট্টগ্রামে বিক্রির প্রস্তুতি নেয় বেপারীরা। ক্রেতা আকর্ষণ আর অধিক মুনাফার আশায় ছোট পশুর পাশাপাশি খামারগুলোতে ১২ থেকে ১৬ মণ ওজনের বিশাল আকৃতির গরু রয়েছে। ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ করা বিশাল আকৃতির গরুগুলো ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন খামারিরা।তবে বছরজুড়ে দেখা সে স্বপ্নপূরণের আগ মুহূর্তে দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে লকডাউন। খামারে খামারে প্রস্তুত রাখা এসব পশু হাটে উঠানো ও বেচাবিক্রি নিয়ে চরম অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়েছে তারা।খামারিরা বলছেন, গতবার করোনায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এবার এখনও সরকার আমাদের বাজারজাত করার অনুমতি দেয়নি। ঈদের আর অল্প কয়েকদিন বাকি। যদি না দেয়, তবে খামারিরা আর দাঁড়াতে পারবে না। আমরা যদি বাজারে বিক্রি করতে না পারি, তবে সমস্যা। কারণ গ্রামের মানুষ তো অনলাইনে তেমন অভ্যস্ত না। আর আমরাও অনলাইন সম্পর্কে এতটা অভিজ্ঞ না।শুধু খামারিরা নয়, ঢাকা চট্টগ্রামে পাঠানোর জন্য মাঠ পর্যায় থেকে পশু সংগ্রহ বিপাকে থাকা বেপারীরাও এখন পুঁজি হারানোর শঙ্কায় রয়েছে। তারা বলছেন, গত বছর অনেক টাকা ক্ষতি হয়েছে। এবার লকডাউনের কারণেও বেচা-কেনা করা যাচ্ছে না। অনেক বড় সংকটে পড়ে যাচ্ছি। এখানে অনলাইনে গরু বিক্রি করা যাচ্ছে না। মানুষও আসতে পারছে না। আমরাও হাটে যেতে পারছি না। এ অবস্থায় আমরা গত বছরের মতোই ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হবো বলে মনে হচ্ছে।আর চলমান এ সংকট মোকাবিলা ও পশু বিক্রি সহজ করতে অনলাইনের পাশাপাশি বিকল্প ব্যবস্থার দাবি ভোলার খামার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আকতার হোসেনের। লকডাউনের মধ্যেই পশু বিক্রির জন্য ৮টি অনলাইনে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। লকডাউন অব্যাহত থাকলে কেনা-বেচা সচল রাখতে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল।তিনি বলেন, আগামী ১৪ তারিখ পর্যন্ত লকডাউন চলছে। কোরবানির আগে যদি লকডাউন উঠে যায়, সেক্ষেত্রে পশু কেনাবেচার জন্য স্থায়ী-অস্থায়ী ৯৩টি হাট আছে, সেগুলো চালু হবে। এক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধা হবে। এবং খামারিরাও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে। ইতোমধ্যেই অনলাইন প্লাটফর্মে আমরা কিছু পশুর ছবিসহ বিস্তারিত দিয়ে পোস্ট দিয়েছে। ১৪ তারিখের পর যদি লকডাউনের সময় বাড়ানো হয়, তবে অনলাইন প্লাটফর্মে আমরা আরও পশুর ছবিসহ বিস্তারিত দিয়ে পোস্ট দেব। কোরবানির পশু বিক্রির জন্য জেলায় ৯৩টি স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুরহাট রয়েছে। এসব হাটে স্বাস্থ্যসম্মত পশু বিক্রি নিশ্চিত করতে ২২টি ভ্যাটেনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে।
দেড় লাখ পশু নিয়ে অপেক্ষায় ভোলার খামারিরা
0
Share.