ঢাকা অফিস: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, দেশে করোনা পরিস্তিতি আরো খারাপের দিকে গেলেও যেতে পারে। তিনি নিজেই তার ফেসবুক টাইমলাইনে গত ১ মে মন্তব্য করেন যে, ‘‘দি ওয়ার্স্ট ইজ ইয়েট টু কাম।’’ অর্থাৎ নিকৃষ্ট অবস্থা এখনও আসেনি। গত ১ মে সকাল ১১ টা ৪৮ মিনিটে একটি বাক্যে দেয়া এটিই তার সর্বশেষ পোস্ট। এই পোস্টের সঙ্গে তিনি তার ১৯টি নতুন আলোকচিত্র যুক্ত করেছেন। এর আগের পোস্টের তারিখ ২৬ এপ্রিল, ২০২০। এতে তিনি মন্তব্য করেন : ’’ লাইফ উইল নট বি দ্যা সেম এগেইন। অর্থাৎ জীবন আগের মতো থাকবে না। এই পোস্টের সঙ্গে তিনি তার ৯টি আলোকচিত্র যুক্ত করেন। অবশ্য ২৪ এপ্রিলেও একই মন্তব্যের সঙ্গে ১৫টি নতুন আলোকচিত্র যুক্ত করেছিলেন তিনি। ১৪ এপ্রিলে নববর্ষে তিনি তার নিজের নতুন ১৯টি আলোকচিত্র পোস্ট করেছিলেন। ২৪ এপ্রিলের পোস্টের সঙ্গে আড়াই হাজার, ২৬ এপ্রিলের পোস্টের সঙ্গে ২৮০০ মন্তব্য এবং ১ মে পোস্টের সঙ্গে ১৭শ মন্তব্যের উল্লেখ দেখা যায়। উল্লেখ্য যে, পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াতে পারে, সেটা নিয়ে বিশ্বজুড়েই অব্যাহতভাবে চলছে নানা জল্পনা–কল্পনা। বিশ্বের দেশে দেশে গবেষকদের নতুন নতুন গবেষণার ফলাফলের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের নানা উক্তি ও মূল্যায়ন মিডিয়া এবং সোশাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশ্লেষক ও পর্যবেক্ষকরা লক্ষ্য করেন যে, কোনো দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মান ফোরকাস্ট বা পূর্বাভাস বিষয়ক রিপোর্ট বা মতামত প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এর সবথেকে জ্বলন্ত প্রমাণ হলো, ব্রিটেনের ইম্পেরিয়াল কলেজ এবং জন হপকিন্সের পূর্বাভাস। ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ গণমাধ্যমে ফলাও করে ছাপা হয়েছে যে, পর্যাপ্ত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নানা উক্তির জন্য মিডিয়ায় প্রায়শ তুলোধুনো হন। তার সাংবাদিক সম্মেলনের নাম পাল্টে দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, এটা ট্রাম্প শো। কিন্তু সেই প্রেসিডেন্ট যখন বলেছেন, করোনায় মৃতের সংখ্যা যদি ১ লাখে সীমিত রাখা সম্ভব হয়, তাহলে তিনি তাতে সন্তুষ্ট থাকবেন। ধরে নেবেন, তার প্রশাসন সফল হয়েছে। এই রকম বিস্ফোরক মন্তব্যের জন্য কিন্তু আর যাই হোক তুলোধুনো হতে হয়নি। কারণ হয়তো তার পূর্বাভাস বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এভাবে ব্রিটেনর রাজনীতিকরাও পূর্বাভাস নিয়ে একই ধাচের বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু প্রশান্ত মহাসাগরের দুই পাড়ে যা স্বাভাবিক থেকেছে, সেটা কিন্তু এশিয়ায় ঘটেনি। অনেক এশীয় দেশে ওই ধরণের গাণিতিক সমীক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে গবেষককে গ্রেপ্তার পর্যন্ত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা একে কালচারাল গ্যাপ বা অতি উৎসাহীদের ভুল বা আবেগতাড়িত জাজমেনট হিসেবে গণ্য করেছেন। তবে বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞরা একমত যে, পরিস্তিতি মোকাবেলায় একটি সম্ভাব্য পূর্বাভাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর সেকারণেই আইইডিসিআর এর সাবেক পরিচালক ড. মাহমুদুর রহমানকে নিয়োগ করা হয় পূর্বাভাস নির্ধারণে। এই রিপোর্ট যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এক লাখ পর্যন্ত আক্রান্ত হতে পারে। অবশ্য এটাও যথারীতি অনেকগুলো ইফ কিংবা বাটের উপর নির্ভরশীল। কোনো সমীক্ষাই যদি কিন্তু বাদ দিয়ে নয়। সঠিক পূর্বাভাস অনেক সময় পরিস্তিতি মোকাবেলায় যথেষ্ট কার্যকর ফল দিতে পারে। কারণ মানুষের অংশগ্রহণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সবটাই সরকারের হাতে নয়। পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটা মানেই সর্বাংশে সরকারি বা স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যর্থতা বলে বিশ্বের কোনো দেশেই গণ্য হওয়ার বিষয় নয়।ওবায়দুল কাদেরের পোস্টের কিছু প্রতিক্রিয়া উম্মে মরিয়ম লিখেছেন, ‘‘ বাট উই আর অল প্রিপেয়ার্ড টু এম্ব্রেস দ্য ওয়ার্স্ট।’’ জেসমিন শামিমা নিঝুম : ’’ স্মার্ট লিডার।’’ খালিদ রাফসান রহমান : স্যার আমরা হার্টের রোগী, এরকম ভয়ংকর ক্যাপশন দিবেন না। দেব দুলাল গুহ: নেতা বাইরে বের হলেই মাস্ক পরবেন। বাতাসে ভাইরাসের ড্রপলেট ভেসে বেড়াচ্ছে। মুহাম্মদ কামরুজ্জামান মিয়াজী : ‘‘ আমরা নিকৃষ্টকে মোকাবেলা করতে সকলেই প্রস্তুত। ইনশাল্লাহ কিছুই ঘটবে না।’’
নিকৃষ্ট অবস্থা এখনও আসেনি: কাদের
0
Share.