প্রকল্পে টাকা বাড়ানোর ধারা বন্ধ করুন: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রকল্প আবার সংশোধন, আবার টাকা বাড়ানো, এই ধরনের ধারা বন্ধ করুন। প্রকল্প যে সময় নেবেন সেই সময়ই শেষ হওয়া উচিত। সময়, ব্যয়ও আরও বাড়িয়ে নিয়ে আসেন। এটা আর হতে পারে না। আজ মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভার সভাপতিত্ব করার সময় তিনি এসব কথা বলেন।  গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের সামনে এ তথ্য তুলে ধরেন। এদিন একনেক সভায় ৩ হাজার ৯০৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ৫২৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৭৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।  সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘চরখালী-তুষখালী-মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ (জেড-৮৭০১)’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে। সংশোধনীতে ৪৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ১০৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৪৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে।  ২০১৭ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবার কথা ছিল। বর্তমানে প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। এসময় প্রকল্পটির সময়-ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। শামসুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ২০১৭ সালে এক বছরের জন্য প্রকল্প নিলেন, এই প্রকল্প এতদিন লাগা উচিত হয়নি এটা তো পুরনো সড়ক ছিল। এটা তো আপনারা তুলে ফেলতে পারতেন। দীর্ঘ সময় কেন লাগলো? আবার সংশোধন, আবার টাকা বাড়ানো—এই ধরনের ধারা বন্ধ করুন। প্রকল্প যে সময় নেবেন, সেই সময়ই শেষ হওয়া উচিত। সময় আরও বাড়িয়ে নিয়ে আসেন, ব্যয়ও বাড়িয়ে নিয়ে আসেন। এটা আর হতে পারে না। এখন ২০২১ সাল পর্যন্ত নিয়েছেন, এটাই শেষ। এরপরে আর বাড়াতে পারব না। যখন যে প্রকল্প হবে, তা যথাসময়ে শেষ করবেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় দক্ষিণাঞ্চলের সব সড়কের মাস্টার প্ল্যান করার জন্যও নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে গেলে উন্নয়ন কার্যক্রমে একটা নতুন গতিশীলতা তৈরি হবে। যে কারণে দক্ষিণাঞ্চলের পুরো এলাকার মাস্টার প্ল্যান করতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ‘কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পটি ২০১৮ জানুয়ারি থেকে চলমান। প্রকল্পের মেয়াদ বেড়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। মূল প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৬৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। বর্তমানে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১০৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে প্রকল্প পরিচালককে খোঁজ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানতে চান প্রকল্প বাস্তবায়ন দেরি হবার কারণ কী? তিনি জানতে চেয়েছেন, প্রকল্প পরিচালক কে? প্রকল্প পরিচালক উপস্থিত ছিলেন না। তবে সচিব উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে শামসুল আলম বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সব প্রকল্পে দেরি হয় কেন জানতে চেয়েছেন? তিনি বলেছেন, ছোট টাকার প্রকল্প এটা। এতদিন তো এটার লাগার কথা না। যখন প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা তখন আরও দুই বছর মেয়াদ বাড়াচ্ছেন কেন? এই সময় বাড়ানোর জন্য ৬৮ কোটির টাকাকে এখন ১০৯ কোটি বানালেন। এটা গিয়ে পর্যালোচনা করুন। প্রকল্প পরিচালকদের ডাকুন। সব প্রকল্প যেন যথাসময়ে শেষ হওয়ার ব্যবস্থা নিন।