প্রস্তুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খুলবে সেপ্টেম্বরেই

0

ঢাকা অফিস: সোমবার (৯ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ জাকির হোসেন সময় নিউজকে জানান, যে কোনো দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।তিনি বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার প্রতিষ্ঠান ভবন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা। সেটি কয়েকদিন পর পর নিয়মিত করা হচ্ছে। এছাড়া, খুলে দেয়া হলে সপ্তাহে একদিন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস এবং সপ্তাহে দুই দিন তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস পরিচালনায় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।সে অনুসারে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত প্রস্তুতি চলছে। তবে, স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় রেখে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুসারেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে বলে জানান তিনি। অনলাইনে তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় যুক্ত করা সম্ভব হয়নি, এছাড়া বাল্য বিয়ে বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলে ঝরে পড়ার হার কমবে।প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল শিক্ষকদের করোনা টিকা গ্রহণ। ইতোমধ্যে অসুস্থতাজনিত কারণে কিছু শিক্ষক ছাড়া প্রায় শতভাগ শিক্ষক করোনা টিকা নিয়েছেন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।জানা গেছে, শিক্ষকদের পাশাপাশি কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার তাগিদ দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।গত শুক্রবার শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের একটি সংগঠন আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী করোনা ভ্যাকসিন সম্পর্কে ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, সরকারি পর্যায়ের শিক্ষকদের প্রায় সবাই করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন। অপরদিকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩ লাখ ৬৩ হাজার ২২২ শিক্ষক ও কর্মচারীর মধ্যে দুই লাখ ৭৮ হাজার ৪২৬ জনই ইতোমধ্যে টিকার আওতায় এসেছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩৪ হাজার শিক্ষকের মধ্যে ভ্যাকসিন  নিয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষক। এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি সকল শিক্ষক করোনা ভ্যাকসিনের আওতায় আসবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।শিক্ষামন্ত্রী এ সময় আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ এবং ৬ হাজার ৭২ জন দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন।শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিষয় সামনে রেখেই শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার তাগিদ রয়েছে। সরকারের ঘোষণা অনুসারে, আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বরে এই দুটি পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী মাসে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার পর পরীক্ষার্থীরা প্রায় তিন মাস শ্রেণিকক্ষে গিয়ে সরাসরি ক্লাস করার সুযোগ পাবে। এতে পরীক্ষার প্রস্তুতি সহজ হবে বলেই দ্রুত স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।এর আগে আরও দুই দফায় প্রস্তুতি নিয়েও করানোর সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ পর্যন্ত গত সতের মাসে দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি বাড়ানো হয়। করোনা সংক্রমণ অব্যাহত থাকায় সবশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান সাধারণ ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

Share.