স্পোর্টস ডেস্ক: ফুটবলের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রমে নেমেছে বাংলাদেশ ফুটবল সাপোর্টার্স ফোরাম (বিএফএসএফ)। ‘নতুন প্রতিভার অন্বেষণে’ স্লোগানকে সামনে রেখে বসুন্ধরা কিংস বিএফএসএফ অনূর্ধ্ব-১৪ অ্যাকাডেমি কাপ আয়োজন করতে চলেছে তারা।বসুন্ধরা কিংসের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সার্বিক সহযোগিতায় বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মাঠে গড়াতে চলেছেন তৃণমূল ফুটবলের আকষর্ণীয় এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসর। ২০১৯ সালে ১২ দল নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল এই টুর্নামেন্ট। এবারের আসরে ঢাকা, সাতক্ষীরা, রংপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, সুনামগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও রাজশাহীর থেকে ১২টি দল অংশ নিচ্ছে। করোনার সব বিধি নিষেধ মেনে পল্টন আউটডোর মাঠে আয়োজন করা হবে খেলা। তৈরি করা হয়েছে প্রতি দলের আলাদা জার্সিও। হাতে আছে আর দেড় মাস। বিএফএসএফের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন জুবায়ের বলেন, ফুটবলকে ভালোবেসে বাংলাদেশ ফুটবল সাপোর্টার্স ফোরাম গঠন করেছিলাম। সময় এসেছে দেশের ফুটবলে অবদান রাখার। তাই ২০১৯ সালে প্রথমবার কিশোরদের নিয়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করি। এরইমধ্যে দ্বিতীয় আসরের সব প্রস্তুতি সেরে ফেলা হয়েছে। টুর্নামেন্ট শুরুর তিন মাস আগে আমরা মেডিকেল করে ফেলেছি। প্রতিটি দলের যারা টিকেছেন তারা নিজেরা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হচ্ছে টুর্নামেন্ট। তাই লম্বা সময় পাচ্ছে তারা। সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ অ্যাকডেমিগুলোতে আমার নিজেরাই মেডিকেল করতে গিয়েছি। আশা করি ৩ ডিসেম্বর থেকে মাঠে গড়াবে টুর্নামেন্ট। কিশোর ফুটবলারদের এই টুর্নামেন্ট বয়স যাচাইয়ের জন্য জেলায় জেলায় গিয়ে জন্ম নিবন্ধন ও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার (পিএসসি) সার্টিফিকেট দেখা হয়েছে। শাহাদাত হোসেন জুবায়ের বলেন, অ্যাকাডেমিগুলোতে বসে ফিটনেসের পাশাপাশি বয়স দেখতে পিএসসির কোড নম্বর অনলাইনে সার্চ করা হয়েছে। এরপর খেলোয়াড়দের বয়স নির্ধারণ করে এসেছি। যাদের বয়স ১৪ বছরের বেশি তাদের বাদ দেয়া হয়েছে। টুর্নামেন্টের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। ভেন্যু পেতে বাফুফেই সহায়তা করছে এবারও। ‘ফেডারেশনের সহযোগিতায় প্রশাসনকে এরই মধ্যে টুর্নামেন্টের বিষয়ে আমরা জানিয়েছি। গেল আসরে খেলার জন্য বলগুলো বাফুফের পক্ষ থেকেই দেয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের একটি রুম রেফারিদের জন্য ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছি আমরা। গেল আসরে বাফুফের মিডিয়া রুম সংবাদ সম্মেলনের জন্য ব্যবহার করেছিলাম। আশা করি এবারও সেই সুযোগ থাকছে।’ যোগ করেন শাহাদাত। সাতটি ক্যামেরা দিয়ে এবারের আসরের খেলা সম্প্রচার করা হবে ফেসবুকের মাধ্যমে। তিনি বলেন, ‘পাঁচটি ক্যামেরার মাধ্যমে আমরা প্রথম আসর সম্প্রচার করেছিলাম। এবারও আরও দুটি ক্যামেরা বাড়ানো হচ্ছে।’ চ্যাম্পিয়নদের জন্য এক লাখ ও রানার্সআপ দলকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হবে। প্রতিটি ম্যাচের জন্যই ম্যাচ ফি পাবে দলগুলো। ম্যাচের জন্য সেরা খেলোয়াড়, টুর্নামেন্টের সেরা গোলদাতা, সেরা খেলোয়াড় ও সেরা গোলরক্ষকের ট্রফি দেয়া হবে। থাকছে ফেয়ার-প্লে ট্রফিও। আগামী ৩ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ১১ তারিখে ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে টুর্নামেন্টটি। বিএফএসএফের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এরই মধ্যে খসড়া সূচি তৈরি করে ফেলেছি আমরা। ক্রীড়া পরিষদের কাছে আবেদনও করে রেখেছি। পল্টন ময়দানে অনেক ইভেন্ট থাকে। এমনিতেই করোনা মহামারি বিশেষ করে বিজয়ের মাসে আমাদের খেলা অনেক ফেডারেশন এখানে নানা আয়োজন করে। সেই বিষয়টিও আমাদের মাথায় রয়েছে। তাই ক্রীড়া পরিষদ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেলেই চূড়ান্ত সূচি ঘোষণা করা হবে।’ বিএফএসএফ অনূর্ধ্ব-১৪ অ্যাকাডেমি কাপের প্রথম আসরের অর্জনও জানিয়েছেন টুর্নামেন্টের আয়োজক শাহাদাত। তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে খেলা ১২ দলের ২৪০ জনের মধ্যে ১৮০ জন খেলোয়াড় পাইওনিয়ার লিগের বিভিন্ন দলে খেলেছে। অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টে শেষ পর্যন্ত সেরা দলগুলোতেই ছিল আমাদের মাধ্যমে খেলতে আসা খেলোয়াড়রা।’
বিএফএসএফ অনূর্ধ্ব-১৪ অ্যাকাডেমি কাপ টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী দল: ‘ক’ গ্রুপ: ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ ফুটবল অ্যাকাডেমি, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ফুটবল অ্যাকাডেমি, ও রংপুরেরে পীরগঞ্জ ফুটবল অ্যাকাডেমি। ‘খ’ গ্রুপ: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জালালী ফুটবল অ্যাকাডেমি, রাজশাহীর হরিয়ান ফুটবল অ্যাকাডেমি, ফেনী জেলার এফসি ইউনাইটেড ফেনী। ‘গ’ গ্রুপ: সাতক্ষীরার ওয়ারিয়র স্পোর্টস অ্যাকাডেমি, সুনামগঞ্জ জুনিয়র ফুটবল অ্যাকাডেমি, টাঙ্গাইল থেকে মরহুম ফরহাদ হোসেন তালুকদার স্মৃতি ফুটবল অ্যাকাডেমি। ‘ঘ’ গ্রুপ: ঢাকার জাফ ফুটবল অ্যাকাডেমি, নারায়ণগঞ্জের জিকেএসপি ফুটবল অ্যাকাডেমি, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ ফুটবল অ্যাকাডেমি।