বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু যুক্তরাষ্ট্রে

0

ঢাকা অফিস:  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় ১৫ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে এই মামলাটি বন্ধ ছিল। কিন্তু গত মাসে মামলার নথি তলব করেছে দেশটির আদালত। এই আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তাদের প্রতিক্রিয়া জমা দিতে সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার। খবর মার্কিন সাময়িকী দ্য পলিটিকোর।১৫ বছর আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা রাশেদকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশটির অভিবাসন আইনজীবীরা এখন বলছেন, এটা যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া ব্যক্তিদের জন্য একটা বার্তা। তার বলছেন, আইনি লড়াইয়ে জয়ী হলেও হঠাৎ করেই সেই সুরক্ষা তুলে নেয়া হতে পারে। তবে রাশেদের আইনজীবী মার্ক ভ্যান ডার হট মার্কিন সরকারের এই সিদ্ধান্তে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। রাশেদকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠালে নিশ্চিতভাবে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে বলেও মনে করছেন তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে পুরোপুরিভাবে ফেভার করছে ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু কেন তারা এটা করছে, সেটাই প্রশ্ন? বাংলাদেশ বহুদিন ধরেই রাশেদকে ফেরত দিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। সেক্ষেত্রে বারের এ ধরনের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই খুশি হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল কেন এই মামলা পুনরায় চালু করেছেন এবং তিনি কি করতে চাইছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় অবস্থান করছেন। হত্যাকাণ্ডের ২৩ বছর পরে ১৯৯৮ সালে নিম্ন আদালতের রায়ে অন্য আসামিদের সঙ্গে পলাতক অবস্থায় তাকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশে বিচার থেকে খুনি চক্রকে রেহাই দেয় তৎকালীন সরকার। খুনিদের বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চাকরি দেয়া হয়। রাশেদ চৌধুরীকে জাপানে বাংলাদেশ মিশনে চাকরি দেয়া হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ইনডেমনিটি আইন বাতিল হলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের পথ খুলে যায়। অভিযুক্তদের বিচার শুরু হয়। রাশেদ চৌধুরী ১৯৬৯ সালে সরকারি চাকরিতে যোগদান করার পর ১৯৭৬ সালে দ্বিতীয় সচিব হিসেবে জেদ্দায় বাংলাদেশ মিশনের দায়িত্ব পান। তিনি নাইরোবি, কুয়ালালামপুর ও ব্রাসিলিয়া দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন এবং ১৯৯৬ সালে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। ওই বছরেই রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেন। তারও ১০ বছর পর তার রাজনৈতিক আবেদন মঞ্জুর করে যুক্তরাষ্ট্র।

Share.