ঢাকা অফিস: শেষ পর্যন্ত চলেই গেল দাফনের আগে নড়েচড়ে ওঠা শিশু মরিয়মকে। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যায় মাত্র ৬ দিন বয়সী নবজাতকটি। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া নবজাতকের বাবা ইয়াসিন মোল্লাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইয়াসিন মোল্লা বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেও আমার মামনিকে বাঁচানো গেল না। আল্লাহ যেন আমার মামনিকে জান্নাতে জায়গা করে দেয়? রাতেই শিশুটিকে রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়। সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখাতে ১৪ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ইয়াসিনের স্ত্রী শাহিনূর বেগম। তাকে গাইনি বিভাগের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। গত শুক্রবার ভোরে সেখানেই একটি মেয়েশিশুর জন্ম দেন তিনি। চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।হাসপাতাল থেকে মৃত্যুসনদ নিয়ে সকাল আটটার দিকে ইয়াসিন সন্তানকে দাফনের জন্য রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে এক হাজার ৫০০ টাকা সরকারি ফি দিতে না পারায় তাদের পরামর্শে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যান লাশ। সেখানে ৫০০ টাকা ফি ও বকশিশ দেয়ার পর মৃত নবজাতকটির জন্য কবর খোঁড়া শুরু হয়। কবর খোঁড়ার শেষপর্যায়ে শিশুর কান্নাকাটির শব্দ শুনতে পান। তিনি আশপাশে কোথাও কিছু না পেয়ে পরে পাশে রাখা নবজাতকটির দিকে খেয়াল করেন। এরপর প্যাকেট খুলে দেখেন শিশুটি নড়াচড়া ও কান্নাকাটি করছে। পরে নবজাতককে দ্রুত আবার ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং চিকিৎসকরা দেখে নবজাতক বিভাগে ভর্তি করেন।শিশুটিকে মৃত ঘোষণার ঘটনায় সমালোচনার মুখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। শিশুটির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে গত মঙ্গলবার হাসপাতালের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালটির পরিচালক এ কে এম নাসিরউদ্দিন বলেন, জন্মের পর ওই নবজাতককে পৌনে এক ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন চিকিৎসকেরা। এই সময়ের মধ্যে তার কোনো স্পন্দন পাওয়া যায়নি। তাকে মৃত ঘোষণায় চিকিৎসকদের কোনো অবহেলা ছিল না। তিনি আরও বলেন, যেহেতু বাচ্চাটি কবরস্থানে গিয়ে নড়েচড়ে উঠেছে, তাই এর দায়ভার এড়ানো যায় না। এ ঘটনায় গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটি কিছু সুপারিশ করেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কিছু সুপারিশ রেখেছে।
বাঁচানো গেল না কবরস্থানে নড়ে ওঠা সেই নবজাতককে
0
Share.